বিগত ১০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভালো ফলন বলছেন কৃষকরা
                                    ফরহাদ খান, নড়াইল
মাঠের পর মাঠ। গ্রাম থেকে গ্রামান্তর। সোনালী ধানের শীষে কথা বলছে হাজারো স্বপ্ন। দক্ষিণা বাতাসে দোল খাচ্ছে এই স্বপ্নগুলো। আর এই স্বপ্নের মাঝেই কৃষকের চোখে-মুখে বইছে আনন্দধারা। এ বছর বোরো ধানের ভালো ফলনে খুশি নড়াইলের কৃষাণ-কৃষাণীরা।
নড়াইল সদরের নয়নপুর, পৌরসভার দুর্গাপুর, লোহাগড়া উপজেলার আমাদা, শালবরাত, পদ্মাবিলা, কালিয়া উপজেলার চাঁচুড়ী, পুরুলিয়াসহ বিভিন্ন এলাকার কৃষাণ-কৃষাণীরা জানান, বিগত ১০ বছরের তুলনায় চলতি মওসুমে নড়াইলে বোরো ধানের ভালো ফলন হয়েছে। এ বছর পর্যাপ্ত সার এবং ওষুধের পাশাপাশি সেচের জন্য ভুগর্স্থ পানি ঠিকমত পাওয়ায় বোরো ধান উৎপাদনে কোনো সমস্যা হয়নি। পহেলা বৈশাখ অর্থাৎ নতুন বছর আসার আগেই নড়াইলে আগাম জাতের বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে।
দুর্গাপুর এলাকার মিজানুর রহমান বলেন, আমি শিক্ষকতার ফাঁকে ২০ শতক জমিতে ধান চাষ করেছি। ফলন ভালো হয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকে ধানকাটা শুরু করেছি। 
প্রদ্যুৎ বিশ্বাস বলেন, এক কানি বা তিন শতক জমিতে দুই থেকে আড়াই মণ ধানের ফলন হয়েছে। এ বছর যেভাবে ধানের ফলন হয়েছে, তাতে ঠিকমত ঘরে তুলতে পারলে; কৃষকদের গোলা ধানে পরিপূর্ণ হবে। ধান ও চালের অভাব থাকবে না।
নয়নপুরের কলেজ প্রভাষক সমেরন্দ্রনাথ বৈরাগী বলেন, আমি দেড় একর জমিতে বাসমতি, রডমিনিকেট চাষ করেছি। মিহির বিশ্বাস বলেন, পাঁচ বিঘা জমিতে মিনিকেট ধানের চাষ করেছি। বিগত ১০ বছরেও এমন ফলন পাইনি।  
প্রধান শিক্ষক উজির আলী বলেন, এখন নড়াইলের প্রতিটি মাঠ সোনালী ধানে পরিপূর্ণ। কৃষকেরা মহাআনন্দে ধান কাটছেন। বিভিন্ন পেশার কর্মজীবীরাও শুক্র ও শনিবার ছুটির দিনগুলোতে ধানকাটার কাজ করছেন।
গৃহবধূ মিতা খানম ও মনিমালা বিশ্বাস জানান, ধান কেটে বাড়িতে আনার পর মাড়াই এবং শুকানোর কাজে ব্যস্ত সময় পারছেন সবাই। অন্তত এক সপ্তাহ আগে থেকে নড়াইলে আগাম জাতের ধানকাটা শুরু হয়েছে। ধানের ফলন ভালো হয়েছে। আমাদের দাবি, ধানচাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে সার, কীটনাশক, স্যালোমেশিনের তেল এবং সেচপাম্পের বিদ্যুৎ খরচ আরেকটু কমাতে হবে। এতে কৃষকরা উপকৃত হবেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নড়াইলের উপ-পরিচালক জসীম উদ্দীন জানান, এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে বোরো ধানের চাষাবাদ হয়েছে। ৫০ হাজার ২৮০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও ১০ হেক্টর জমিতে বেশি আবাদ হয়েছে। গত বছর চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫০ হাজার ২৩০ হেক্টর জমিতে। চাষাবাদ সহজ ও সুলভ করতে বিনামূল্যে বীজ, সার, কীটনাশক ও ছত্রাকনাশকসহ বিভিন্ন কৃষি প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। 
What's Your Reaction?
                    
                
                    
                
                    
                
                    
                
                    
                
                    
                
                    
                
                                                                                                                                            
                                                                                                                                            
                                                                                                                                            
