৪৪তম বিসিএসে ক্যাডার পদ বৃদ্ধির দাবি ফল প্রত্যাশীদের

ময়মনসিংহ, ২৪ জুন (বাকৃবি প্রতিনিধি/আওয়ার ভয়েস) – ৫ আগস্ট পরবর্তী বাংলাদেশে নানা পরিবর্তনের অঙ্গীকার থাকলেও ৪৪তম বিসিএস প্রার্থীরা এখনও রয়ে গেছেন দীর্ঘ অপেক্ষা আর হতাশার বেড়াজালে।
৪৪তম বিসিএস প্রক্রিয়া প্রায় তিন বছর সাত মাসের দীর্ঘ সময়ে শেষ হয়েছে। অথচ চূড়ান্ত ফলাফল এখনও আসেনি। ফলাফলের আগে পরীক্ষার্থীদের মুখে নেই আশার আলো, বরং রয়েছে গভীর হতাশা আর আহাজারি।
সরকারি তথ্য মতে, ২০২১ সালের ৩০ নভেম্বর প্রকাশিত হয় ৪৪তম বিসিএস-এর সার্কুলার। যেখানে প্রাথমিকভাবে ১ হাজার ৭শ’ ১০টি ক্যাডার পদে নিয়োগের কথা বলা হয়। তবে প্রতি বিসিএসের সাধারণ রেওয়াজ অনুযায়ী, চূড়ান্ত ফলাফলের আগে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে পদ সংখ্যা বাড়ানো হয়ে থাকে। দৃষ্টান্তস্বরূপ, ৩৭তম বিসিএসে ১১২টি, ৩৮তমে ৪০০টি, ৪০তমে ৪৬৩টি, ৪১তমে ৫২০টি এবং ৪৩তম বিসিএসে ৪০৪টি ক্যাডার পদ চূড়ান্ত ফলাফলের আগে বৃদ্ধি করা হয়েছিল। এই প্রেক্ষাপটে নায্যতা নিশ্চিত করতে ও বৈষম্য নিরসনে ৪৪তম বিসিএসে সরকারের উচিত অতিরিক্ত ক্যাডার পদ দ্রুত বৃদ্ধি করে চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) সাংবাদিক সমিতির কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ক্যাডার সংখ্যা বৃদ্ধির দাবি তুলে ধরেন ৪৪তম বিসিএস ফল প্রত্যাশীরা।
৪৪তম বিসিএসের ফলপ্রত্যাশী প্রার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্য মতে ৪৪তম বিসিএসে বিভিন্ন ক্যাডারে (যেমন: ট্যাক্স, পরিবার পরিকল্পনা, কৃষি, স্বাস্থ্য, প্রাণিসম্পদ) মোট ৩৮২টি অতিরিক্ত পদ বৃদ্ধির প্রস্তাবনা থাকলেও তা শেষ পর্যন্ত ৪৭তম বিসিএসে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। এতে হতাশ ও ক্ষুব্ধ হয়েছে ৪৪তম বিসিএস প্রার্থীরা। দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পরও তাদের প্রতি সরকার বিমাতাসুলভ আচরণ করছে কর্তৃপক্ষ বলে অভিযোগ তাদের।
তারা আরও বলেন, ৪৪তম বিসিএসের ভাইভা পরীক্ষাও দুই দফায় সম্পন্ন হয়েছে। একটি আগের স্বৈরাচার সরকারের আমলে এবং আরেকটি নতুন সরকারের অধীনে। তখন অনেকেই আশ্বস্ত হয়েছিলেন যে, নতুন সরকার বৈষম্য দূর করে একটি ন্যায়ভিত্তিক বাংলাদেশ গড়বে। কিন্তু বাস্তবে ৪৪তম বিসিএস প্রার্থীদের অনেকেই বলছেন যে তারা আগের থেকেও বেশি বঞ্চিত হয়েছে।
ফল প্রত্যাশী প্রার্থীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) বরাত দিয়ে বলেন, ২০২৪ সালের পহেলা সেপ্টেম্বরে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি কৃষি ক্যাডারের জন্য ১১০টি শূন্য পদের সাথে অতিরিক্ত ৫০টি পদ বৃদ্ধি করে ১৬০টি পদে নিয়োগের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। কিন্তু বিজ্ঞপ্তিটি প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে বাতিল করা হয়। পরবর্তীতে নতুন করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে কৃষি মন্ত্রণালয়ে কোন চিঠি না পাঠালে, কৃষি মন্ত্রণালয়ে জমে থাকা ১১৫টি ক্যাডার পদ বৃদ্ধির প্রক্রিয়াও আইনি জটিলতায় আটকে আছে। একই সমস্যা দেখা দিয়েছে অন্যান্য মন্ত্রণালয়েও।
সংবাদ সম্মেলনে সরকারের কাছে দাবি তুলে ৪৪তম বিসিএসের ফল প্রত্যাশী প্রার্থীরা বলেন, সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) প্রথমবারের মতো ২০২৫ সালে তিনটি মুক্ত আলোচনার আয়োজন করে, যেখানে অংশগ্রহণকারী অনেক প্রার্থী নতুন বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি পেয়ে আশাবাদী হয়েছিলেন যে, আর কোন প্রার্থী বৈষম্যের শিকার হবেন না। কিন্তু ৪৪তম বিসিএস-এর প্রার্থীদের অভিজ্ঞতা সেই প্রতিশ্রুতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। এই প্রেক্ষাপটে আমাদের জোরালো দাবি, সরকারের উচিত ফল প্রকাশের আগে ৪৪তম বিসিএসে অতিরিক্ত ক্যাডার পদ দ্রুত বৃদ্ধি করে চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা। নইলে ‘নতুন বাংলাদেশ’-এর ধারণাই প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়বে।
What's Your Reaction?






