জবির চারুকলা অনুষদে ‘বসন্ত বরণ ও ভর্তা উৎসব’
ঢাকা, ০৬ মার্চ (জবি প্রতিনিধি/আওয়ার ভয়েস) – ‘বসন্ত বাতাসে’ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) চারুকলা অনুষদের আয়োজনে ঋতুরাজ বসন্তকে বরণ করে নেয়া হয়েছে।
বিভাগের আয়োজনে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিয়ে নেচে গেয়ে ‘বসন্ত বরণ ও ভর্তা উৎসব-১৪৩০’ উদযাপিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউটিলিটি ভবনের ছাদে এই উৎসবের আয়োজন করা হয়। বসন্তকে বরণ করার পাশাপাশি বিশেষ আয়োজন হিসেবে ভর্তা উৎসবের আয়োজন করে চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীরা। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়র ১৫তম আবর্তন অর্থাৎ চারুকলা অনুষদের সপ্তম আবর্তন এ আয়োজন করে।
রঙিন এ দিনটিতে সকাল থেকেই শিক্ষার্থীরা নেচে-গেয়ে বসন্ত বরণ উৎসব পালন করে। এসময় চারুকলার ছাদে বসন্তের ঝরা পাতার আদলে মঞ্চ সাজানো হয়। এছাড়াও এবছর ভর্তা উৎসব বসন্ত বরণ উৎসবকে অন্য আমেজ এনে দেয়। এই আয়োজনে ভর্তাগুলোর মধ্যে ছিল আলু ভর্তা, কালোজিরা ভর্তা, শিম ভর্তা, ডাল ভর্তা, টমেটো ভর্তা ও বিভিন্ন প্রকারের শুটকি ভর্তাসহ ৩০ এরও অধিক প্রকারের ভর্তার সমারোহ। সাথে ছিল বিশেষভাবে রান্না করা ভাত। দিনব্যাপী সকলে মিলে আনন্দঘন পরিবেশে ভাত-ভর্তা উৎসবে মেতে উঠে।
এছাড়াও ভর্তা উৎসবের পর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে দিনব্যাপী চলে বসন্ত বরণ উৎসব। হলুদ, গোলাপি, নীল, লাল শাড়িতে মেতে উঠে তরুণীরা। সবার মাথায় বসন্তের আগমনী ফুলের মালা। ছেলেরা পরে হরেক রকমের পাঞ্জাবি। এ সময় বিভাগের শিক্ষার্থীরা ছবি-সেলফি তোলাসহ খোশগল্পে মেতে উঠে।
চারুকলা অনুষদের ড্রইং অ্যান্ড পেইন্টিং বিভাগের সপ্তম ব্যাচের শিক্ষার্থী নাজমুন নাহার মুনা বলেন, ‘প্রতিবছরের ন্যায় এবারও আমরা শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মেলবন্ধনের মধ্য দিয়ে বসন্ত বরণ উৎসবকে সর্বাত্মক ফুটিয়ে তুলার চেষ্টা করেছি। বর্ণিল আয়োজনের মধ্য দিয়ে ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ককে দৃঢ় রেখে আগামী দিনগুলোতেও এই উৎসব পালন করবো।’
ভাত-ভর্তা খেয়ে প্রিন্টমেকিং বিভাগের শিক্ষার্থী উম্মে মিশু জানান, ‘ভর্তাগুলো খুবই সুস্বাদু ছিল। এটি এবারের বসন্ত বরণ উৎসবকে ভিন্ন আমেজ এনে দিয়েছে। নগর জীবনে এমন আয়োজন বাঙালির সাংস্কৃতিক সত্তাকে জাগিয়ে তুলে।'
চারুকলা অনুষদ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান বলেন, প্রতিবছরের ন্যায় এবারও আমরা আমাদের বিভাগে বর্ণিল আয়োজনের মাধ্যমে বসন্তবরণ উৎসব করেছি।
বসন্ত বরণ উৎসবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, 'আমাদের বাঙালি জাতির ১২ মাসে ১৩ পার্বণ। আমরা বাংলাদেশে বিভিন্ন ধর্মের মানুষ থাকি, যে যেই ধর্মেরই হই না কেন উৎসব একসাথে উদযাপন করি, ঈদ বা পূজা যেটায় হোক সবাই একসাথে পালন করি। আমরা অসাম্প্রদায়িক চেতনা নিয়ে থাকি। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে একেকটা উৎসব একেকটা বিভাগ দায়িত্ব নিয়ে করেছে। চারুকলার এমন আয়োজন বাঙালির সংস্কৃতিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক চর্চাকে গতিশীল করছে।'
অনুষ্ঠানে চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোহা. আলপ্তগীন, ভাস্কর্য বিভাগের চেয়ারম্যান ইমাম হোসেন সহ অনুষদের সকল বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ সহ শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টররাও এ উৎসবে অংশ নেন।
What's Your Reaction?