‘গুণগত শিক্ষা ও শৃঙ্খলাই আমাদের সাফল্যের ভিত্তি’ - অধ্যক্ষ

ময়মনসিংহ, ১৯ সেপ্টেম্বর (বাকৃবি প্রতিনিধি/আওয়ার ভয়েস) – ২০২৫ সালের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় (এইচএসসি) ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডে শীর্ষস্থান অর্জন করেছে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ। এ বছর কলেজটির পাসের হার ৯৯ দশমিক ৪৭ শতাংশ এবং ৩৭৬ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে। ফলাফলের এই সাফল্যে সন্তোষ প্রকাশ করে কলেজের অধ্যক্ষ ড. মো. আতাউর রহমান বলেন, ‘গুণগত শিক্ষা ও শৃঙ্খলাই আমাদের সাফল্যের ভিত্তি। শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের সম্মিলিত প্রচেষ্টাতেই এ ফলাফল সম্ভব হয়েছে।’
রবিবার বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থিত কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ সভাকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে কলেজের বিভিন্ন বিভাগের অধ্যাপক এবং কলেজ পরিচালনা কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
অধ্যক্ষ বলেন, প্রতিটি শিক্ষার্থীর মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে কলেজে আধুনিক মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম, সাউন্ড সিস্টেম, ডিজিটাল ল্যাব, লাইব্রেরি ক্লাস কার্ড সিস্টেমসহ উন্নত শিক্ষণ পদ্ধতি চালু রয়েছে। আমরা নিয়মিত ক্লাস পর্যবেক্ষণ, অ্যাসাইনমেন্ট মূল্যায়ন ও শিক্ষার্থীদের মেন্টরিং সেশন পরিচালনা করে থাকি। এ ছাড়া বোর্ড পরীক্ষার আগে বিশেষ ক্লাস ও মডেল টেস্টের ব্যবস্থা করা হয়, যাতে শিক্ষার্থীরা বাস্তব পরীক্ষার পরিবেশে অনুশীলনের সুযোগ পায়।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এই কলেজটি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই মানসম্মত শিক্ষায় অগ্রণী ভূমিকা রেখে আসছে। আমাদের লক্ষ্য শুধু ভালো ফল নয়, বরং সৎ, চরিত্রবান ও সামাজিকভাবে দায়বদ্ধ নাগরিক তৈরি করা। শিক্ষার্থীদের একাডেমিক উৎকর্ষের পাশাপাশি তাদের মানবিক বিকাশেও আমরা সমান গুরুত্ব দিয়ে থাকি।
কলেজটির সাফল্য তুলে ধরে অধ্যক্ষ ড. মো. আতাউর রহমান বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকে কলেজটি শিক্ষার মানোন্নয়নে ধারাবাহিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। শিক্ষা, গবেষণা ও সহশিক্ষা কার্যক্রমে উৎকর্ষের কারণে কলেজটি এখন ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের অন্যতম শীর্ষ প্রতিষ্ঠান। কলেজটির শিক্ষার্থীরা ইতিমধ্যে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অসাধারণ সাফল্য অর্জন করেছে। বিসিএস পরীক্ষায় প্রশাসন ক্যাডারে প্রথম স্থান, কৃষি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম স্থান, আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে পদক অর্জন—এসবই আমাদের শিক্ষার মান ও সক্ষমতার প্রমাণ। ইতিপূর্বে এক ব্যাচ থেকেই ৫২ জন শিক্ষার্থী সরকারি মেডিকেলে এবং ৩৮ জন বুয়েটে ভর্তি হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে। এছাড়া বুয়েটের বিভিন্ন ব্যাচে আমাদের শিক্ষার্থীরা আটবার দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে। এই সাফল্যের কৃতিত্ব আমাদের পরিশ্রমী শিক্ষক, নিবেদিতপ্রাণ কর্মচারী, দায়িত্বশীল অভিভাবক এবং সর্বোপরি মেধাবী শিক্ষার্থীদের। মহান আল্লাহর রহমতে আমরা ধারাবাহিকভাবে ভালো ফল করছি এবং ভবিষ্যতেও মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাব।
প্রসঙ্গত, কলেজটি ১৯৮৫ সালে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্ত্বাবধানে প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে এখানে আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষা পদ্ধতি, মানসম্মত প্রশিক্ষণ এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থীর নিবিড় যোগাযোগের মাধ্যমে শিক্ষার মান উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে প্রতিষ্ঠানটি।
What's Your Reaction?






