বাকৃবিতে অধ্যাপক সাইফুলের লেখা নাটকের প্রদর্শনী কাল
ময়মনসিংহ, ০৫ মার্চ (বাকৃবি প্রতিনিধি/আওয়ার ভয়েস) – মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে স্বাধীনতার চেতনাকে উজ্জীবিত করতে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) প্রদর্শিত হবে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক তিনটি একক নাটক।
বাকৃবির পশুপালন অনুষদের পশুপুষ্টি বিভাগের অধ্যাপক ড. খান মো. সাইফুল ইসলামের রচনা এবং অঞ্জন আইচ-এর পরিচালনায় যথাক্রমে ‘ক্ষোভ’, ‘ভুলনা আমায়’ ও ‘রায়ট লতা’ নাটক তিনটি পর পর প্রদর্শিত হবে। এর মধ্যে ‘রায়ট লতা’ নাটকটি পরিচালনা করেছেন অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম নিজেই।
বুধবার বিকাল ৫টা থেকে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন মিলনায়তনে গ্রীন ভয়েস বাকৃবি শাখার আয়োজনে নাটকগুলোর প্রদর্শনী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।
মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন অধ্যাপক ড. খান মো. সাইফুল ইসলাম। অধ্যাপক সাইফুল ইসলামের দাপ্তরিক কক্ষে ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক ইসলাম জানান, প্রত্যেকটি একক নাটকের সময়সীমা ৪০ থেকে ৪১ মিনিটের মধ্যে। নাটক তিনটি ২০১৮ থেকে ২০২১ সাল সময়কালে রচনা করা হয়েছে। এর মধ্যে চ্যানেল আই এ সম্প্রচারিত ‘ক্ষোভ’ নাটকটিতে অভিনয় করেছেন তারেক আনাম, ইন্তেখাব দিনার, নদিয়া এবং অন্যান্যরা। এনটিভিতে সম্প্রচারিত ‘ভুলনা আমায়’ নাটকটিতে অভিনয় করেছেন মনোজ, প্রভা, পাভেল ইসলাম এবং অন্যান্যরা। এনটিভিতে সম্প্রচারিত ‘রায়ট লতা’ নাটকটিতে অভিনয় করেছেন জাকিয়া বারী মম, ইন্তেখাব দিনার, শিল্পী সরকার অপু এবং অন্যান্যরা। এছাড়া ‘মুক্তিযুদ্ধ ও মিডিয়া’ শীর্ষক একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত থাকবেন নাট্য ব্যক্তিত্ব মনোজ প্রমাণিক। এছাড়াও সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. হারুন-অর-রশিদ এবং প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আজহারুল ইসলাম।
অধ্যাপক ইসলাম নাটকগুলোর বিষয়বস্তুর বিষয়ে জানান, মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ভালবাসার গল্প ‘রায়ট লতা’ এবং ‘ভুলনা আমায়’। অন্যদিকে স্বাধীনতা অর্জনের দীর্ঘ ৪৫ বছর পরে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধোকে খুনের মামলায় মিথ্যা আসামী বানানোর গল্প হলো ‘ক্ষোভ’।
‘রায়ট লতা’ নাটকে একজন হিন্দু মুক্তিযোদ্ধার প্রতি একজন মুসলিম বীরাঙ্গনার প্রগাঢ় ভালবাসার গল্প ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে।
অন্যদিকে, ‘ভুলনা আমায়’ নাটকে দেখানো হয়েছে একজন সদ্য বিবাহিত মুক্তিযুদ্ধে বেরিয়ে পড়েছেন দেশের তরে। তার পাশের গ্রামের আরেকজন মুক্তিযোদ্ধা কালাম মাঝেমধ্যে চুপিসারে অসুস্থ মাকে দেখতে আসেন। সেই ফাঁকেই স্ত্রী মরিয়ম কালাম ভাইয়ের কাছে স্বামীর খোঁজ খবর নেয়। স্বামী ফিরে আসবে এই আকুল অপেক্ষায় স্ত্রী মরিয়ম অপেক্ষায় একটি রুমাল বুনছে যেখানে লেখা রয়েছে ‘ভুলনা আমায়’ অথচ মরিয়মের স্বামী ইতিমধ্যে মুক্তিযুদ্ধে বীরত্ব লাভ করেছে।
আবার ক্ষোভ নাটকের মূল প্রতিপাদ্য, একজন বৃদ্ধ মুক্তিযোদ্ধো আব্দুল লতিফ খানকে রিপোর্টার মারিয়ার খুনের ব্যাপারে আসামী করা হয়েছে। পরবর্তীতে, তার ব্যাপারে তদন্ত করা হলে জানা যায়, তৎকালীন সময়ে একটি গ্রামকে পাকিস্তানী মুক্ত করেছিলেন আব্দুল লতিফ খান। কিন্তু বিব্রতবোধ হবার দরুণ নিজের পরিচয়কে গোপনেই রাখতে চান আব্দুল লতিফ। তার সঠিক পরিচয় জানবার পর সবার বোধদয় হয়, সবাই আসলে মূল ঘটনা থেকে সরে গিয়েছে, অভিমানে থানা ত্যাগ করেন আব্দুল লতিফ খান।
নাটকগুলোর ব্যাপারে অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম বলেন, এই নাটকগুলো শিক্ষার্থীদের মাঝে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ফুটিয়ে তুলবে। নাটকগুলোর মূলভাব শিক্ষার্থীদেরকে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে নতুনভাবে ভাবাবে। একজন মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের পরিবারের কাছে মুক্তিযুদ্ধটা আসলে কেমন ছিলো সেটি তাঁরা অনুধাবন করতে পারবে।
উল্লেখ্য, অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম রচিত বিভিন্ন টেলিভিশনে প্রচারিত অন্যান্য নাটকসমূহ হলো মানুষ এবং মানুষ, আমি কেউ না, বিপরীত স্রোতে যাত্রা, কেমন আছ, শুন্যতা, লাভ ইউ বাবা এবং মাকে মনে পড়ে। এছাড়াও তাঁর রচিত বেশ কিছু মঞ্চ নাটকও রয়েছে।
What's Your Reaction?