আয়ারল্যান্ডে রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য কঠিন হচ্ছে আইন

মো: সাখাওয়াৎ হোসেন (সাখাওয়াৎ লিটন)
বিগত কয়েক বছর ধরে আয়ারল্যান্ডে রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীদের সংখ্যা অধিকহারে বৃদ্ধির ফলে আবাসন, কর্মসংস্থান সহ বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে আইরিশ সরকার ও জনগণ। আর এজন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে বৈধ ও অবৈধ পথে আসা এসাইলাম আবেদনকারীদের নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে কঠিন আইন করতে যাচ্ছে আয়ারল্যান্ড সরকার। সম্প্রতি জাস্টিস মিনিস্টার জিম ও’ক্যালাহান এ বিষয়ে মন্ত্রীসভায় নতুন কিছু নিয়ম প্রস্তাব করেন।
মঙ্গলবার তার প্রস্তাবিত আইনে বেশকিছু পরিবর্তন আনা হবে বলে জানা গেছে, যা অভিবাসন প্রত্যাশীদের আবেদন প্রক্রিয়াকে আরো কঠিন করে তুলবে। এ প্রস্তাবনায় উঠে এসেছে অনেক সীমাবদ্ধতা যা এর আগে ছিল না।
এপ্রিল ২০২৩ থেকে ২০২৪ এর এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে প্রায় ১৫০ হাজার অভিবাসন প্রত্যাশী অ্যাসাইলাম এর জন্য আবেদন করেন। ক্রমবর্ধমান আবেদনের এই সংখ্যা সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনতে এবং দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার অংশ হিসেবে মূলত মন্ত্রীসভায় এই প্রস্তাবগুলো উত্থাপন করেন জাস্টিস মিনিস্টার জিম ও’ক্যালাহান।
জিম ও’ক্যালাহান এর প্রস্তাবিত পরিবর্তনগুলো হল:
• আয়ারল্যান্ডে প্রবেশকারী ব্যক্তিদের জন্য একটি নতুন স্ক্রিনিং প্রক্রিয়া চালু করা হবে। যাতে বোঝা যায় তারা জাতীয় নিরাপত্তা বা জনশৃঙ্খলার জন্য হুমকি কি না।
• বর্ডার প্রোসিডিউর চালু করা হবে, যারা মিথ্যা তথ্য দেন বা নিরাপত্তা হুমকি হিসেবে বিবেচিত হন তাদেরকে যেন দ্রুত দেশে ফেরত পাঠানো যায়।
• প্রতিটি আবেদন প্রক্রিয়া শুরু থেকে সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত তিন মাসের সময়সীমা বেঁধে দেয়া হবে। তার মানে সব আবেদন তিন মাসের মধ্যেই শেষ হতে হবে। এর মাঝে যারা আবেদনে সফল হবে তারা অ্যাসাইলাম পাবে, আর যাদের আবেদন সফল হবে না তারা অ্যাসাইলাম পাবে না।
• শুনানির ব্যবহার সীমিত করা হবে। যা বর্তমানে এক বছর পর্যন্ত সময় নিতে পারে এবং আইনি অনুবাদক প্রয়োজন হয়।
• আপিল প্রক্রিয়ার দায়িত্বে থাকবে নতুন রাষ্ট্রীয় সংস্থা। যারা কেইসের উপর নির্ভর করে আপিলের অনুমতি প্রদান করবে।
• এই সংস্থাকে অ্যাসাইলাম অফিসার আশ্রয়প্রার্থীদেরকে যে কোনো মুহূর্তে জাস্টিস মিনিস্টারের অনুমতি ছাড়াই দেশে ফেরত পাঠানোর ক্ষমতা দেয়া থাকবে।
• এই প্রস্তাবিত নিয়মগুলো কার্যকর হলে, যেসব অ্যাসাইলাম আবেদনকারীর আবেদন প্রত্যাখ্যান হবে, তাদের পক্ষে সেই সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করা অনেক কঠিন হয়ে পড়বে।
অভিবাসন প্রত্যাশীদের আশ্রয় প্রক্রিয়া আরও দ্রুত, নিয়ন্ত্রিত এবং কার্যকর করাই হচ্ছে নতুন এই আইনের লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন জাস্টিস মিনিস্টার জিম ও’ক্যালাহান।
মন্ত্রীর প্রস্তাবিত এই প্রস্তাবনা মন্ত্রিসভা থেকে অনুমোদন পাওয়ার পর, সংসদে ভোটাভুটির মাধ্যমে অনুমোদিত হতে হবে। সরকার চাচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মাইগ্রেশন চুক্তি কার্যকর হওয়ার আগেই এই আইনটি পাস করাতে। যাতে করে তাদের কার্যক্রম আরো সহজ ও ত্বরান্বিত হয়।
What's Your Reaction?






