ভ্যানের জন্য কিশোর হত্যা, স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী

নড়াইল, ০৭ অক্টোবর (জেলা প্রতিনিধি/আওয়ার ভয়েস) – নড়াইল সদর উপজেলার তুলারামপুর ইউনিয়নের ছোট মিতনা গ্রামের কিশোর ভ্যানচালক আমিনুর বিশ্বাস আলিপ (১৫) হত্যায় দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে প্রেসব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম। গ্রেফতারকৃত দুইজন সদরের চাঁচড়া গ্রামের বাহারুল বিশ্বাসের ছেলে মিনারুল এবং হাফিজুর মোল্যার ছেলে হৃদয় (২০)।
আসামিরা আলিপকে হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন। মঙ্গলবার তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ সুপার জানান, নিহত আলিপের মা রোজিনা বেগম ৫ অক্টোবর সকালে সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন যে; তার বড় ছেলেকে (আলিপ) খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। সেই জিডির সূত্র ধরে আলিপের খোঁজ শুরু করে পুলিশ। প্রায় এক ঘণ্টার মধ্যে আলিপ হত্যায় সদরের চাঁচড়া গ্রামের মিনারুলকে আটক করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে মিনারুল স্বীকার করে যে, ঘটনার দিন ৩ অক্টোবর সকালে আলিপ ইজিভ্যান নিয়ে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর ওইদিন রাতের বেলা সে (মিনারুল) এবং হৃদয় আলিপের ইজিভ্যান চুরির জন্য তাকে হত্যা করে।
ঘটনার দিন রাতে একসঙ্গে আলিপের ব্যাটারিচালিত ইজিভ্যানে বিভিন্ন স্থানে তারা ঘোরাফেরা করে। একপর্যায়ে তারা কোমল পানীয়র মধ্যে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে আলিপকে পান করায়। আলিপের যখন ঘুম ভাব আসে তখন আসামি হৃদয় মোল্যা আলিপের ভ্যান চালিয়ে বাহিরগ্রাম বাজারে যায়।
আসামিরা অপকৌশলে আলিপকে বাহিরগ্রাম বাজারে রেখে চার্জ দেওয়ার কথা বলে ভ্যানটি নিয়ে হৃদয়ের মামাবাড়ি রেখে আসে। এরপর তিনজন একসঙ্গে হেটে দেবভোগের দিকে যায়। সেখানে মিনারুল ও হৃদয় ঘুমের ভান করে আলিপের সঙ্গে বিলের মধ্যে ঘাসের ওপর শুয়ে পড়ে। আলিপ ঘুমিয়ে গেলে হৃদয় তার (আলিপ) পা ধরে রাখে এবং মিনারুল গলাচেপে শ্বাসরোধে আলিপকে হত্যা করে। তার মৃতদেহ পাশের ডোবায় কচুরিপানায় নিয়ে রেখে আসে।
আসামিরা পরেরদিন ৪ অক্টোবর আলিপের ভ্যানের ব্যাটারি খুলে নড়াইল শহরের রূপগঞ্জ এলাকায় বিক্রি করে। আর ভ্যানটি হৃদয়ের মামাবাড়ি রেখে দেয়। পুলিশ অভিযান চালিয়ে ভ্যান ও ব্যাটারি উদ্ধার করে।
প্রথমে মিনারুলকে আটকের পর সোমবার রাতে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী থানার ভাটিয়াপাড়া থেকে হৃদয়কে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ সময় আলিপের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় আলিপের মা রোজিনা বেগম বাদী হয়ে সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
প্রেসব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) নূর-ই আলম সিদ্দিকী এবং সদর থানার ওসি সাজেদুল হকসহ পুলিশ কর্মকর্তারা।
What's Your Reaction?






