নড়াইলে গুলিবিদ্ধ ২, আহত ২০, পুলিশের ভ্যানে আগুন
নড়াইল, ০৪ আগস্ট (জেলা প্রতিনিধি/আওয়ার ভয়েস) – বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নড়াইল পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান প্রিন্স (৩৫) এবং ৭০ বছরের বৃদ্ধ নড়াইল সদরের নাকশী গ্রামের কৃষক গোলাম রসুল খান গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
রোববার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত দফায় দফায় ছাত্র আন্দোলনকারী, পুলিশ, আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনের সঙ্গে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। গুলিবিদ্ধ দু’জনকে নড়াইল জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ সময় পথচারী এক নারীসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।
এদিকে, আন্দোলনকারীরা নাকসী-মাদরাসা বাজার এলাকায় পুলিশের পিকআপ ভ্যানে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১৫০ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ও ৬০ রাউন্ড টিয়ারশেল ছুঁড়েছে পুলিশ। এছাড়া ইটের আঘাতে পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
অপরদিকে, সকাল থেকে গুজব ছড়িয়ে পড়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে দু’জন আন্দোলনকারী নিহত হয়েছেন। তবে রোববার সন্ধ্যায় এ খবর লেখা পর্যন্ত পুলিশ, হাসপাতালসহ অন্য মাধ্যমে নিহত হওয়ার কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, রোববার সকাল থেকে নড়াইল-ঢাকা-বেনাপোল মহাসড়কের নড়াইল অংশে মাদরাসা ও মালিবাগ এলাকায় হাজারো বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরা জমায়েত হন। বেলা ১১টার দিকে তারা ‘শেখ রাসেল সেতু’ দিয়ে শহরে প্রবেশের চেষ্টা চালালে ত্রিমুখী সংঘর্ষ শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ দফায় দফায় টিয়ারসেল ও শর্টগানের গুলি ছুঁড়ে।
সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি শেখ রিয়াজ মাহমুদ মিশাম দাবি করে বলেন, বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের আন্দোলন থেকে প্রিন্স গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
এছাড়া সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আকাশ ঘোষ রাহুল (২৫), পথচারী রুপালী বেগম (৫০), সৌরভ রায় (৩৩), মাহমুদুল হাসানসহ (৩৪) অন্তত ২০ জন আহত হন। দুপুরে মাদরাসা বাজার এলাকায় পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যানে আগুন ধরিয়ে দেয় দুবৃর্ত্তরা। এ সময় তিন পুলিশ সদস্যকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। এ খবরে পুলিশ সদস্যরা মাদরাসা এলাকায় গিয়ে টিয়ারসেল ও শর্টগানের গুলি ছুঁড়ে। এ সময় বাড়িতে অবস্থানরত কৃষক গোলাম রসুল খান গুলিবিদ্ধ হন।
এদিকে, নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেকে জানান, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছেন। তবে তারা কোথায় চিকিৎসা নিচ্ছেন, তা জানা যায়নি।
নড়াইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারেক আল মেহেদী বলেন, ছাত্র আন্দোলনের নামে বিশৃংখলা সৃষ্টির চেষ্টাকালে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১৫০ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ও ৬০ রাউন্ড টিয়ারশেল ছুঁড়েছে। আন্দোলনকারীরা পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যানে আগুন ধরিয়ে দেয়। এছাড়া আন্দোলনকারীদের ইটের আঘাতে আমাদের পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
What's Your Reaction?