বাকৃবিতে নতুন হলে আসনের দাবিতে ছাত্রীদের বিক্ষোভ 

Oct 18, 2025 - 03:34
 0  6
বাকৃবিতে নতুন হলে আসনের দাবিতে ছাত্রীদের বিক্ষোভ 
ছবিঃ প্রতিনিধি/ওভি

ময়মনসিংহ, সেপ্টেম্বর (বাকৃবি প্রতিনিধি/আওয়ার ভয়েস) বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) নির্মানাধীন খালেদা জিয়া হলে আসন বরাদ্দ নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন হেলথ কেয়ারে অবস্থানরত (কৃষিকন্যা হলের বর্ধিতাংশ) ছাত্রীরা।

শুক্রবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি সংলগ্ন সড়ক অবরোধ করে তারা অবস্থান নেন। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, আগে ভর্তি হয়েও তারা হলে জায়গা পাচ্ছেন না, অথচ পরে ভর্তি হওয়া নবীন ছাত্রীদের খালেদা জিয়া হলে তোলা হচ্ছে।

সন্ধ্যা প্রায় ৩ ঘন্টা সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেন তারা। সরেজমিনে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা দাবি মোদের একটাই, স্থায়ী হলে আসন চাই’, ‘সিনিয়র হেলথ কেয়ারে, জুনিয়র কেন হলেএমন স্লোগান দিতে থাকেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন রাত সাড়ে নয়টার দিকে তাদের হলে ফিরিয়ে নিয়ে যান।

আন্দোলনকারী সূত্রে জানা যায়, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ১৮০ জন ছাত্রীকে ভর্তি হওয়ার সময় কৃষি কন্যা হলের বর্ধিতাংশে অর্থাৎ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য প্রতিষেধক শাখার (হেলথ কেয়ার) তৃতীয় ও চতুর্থ তলায় অস্থায়ীভাবে রাখা হয়। তখন জানানো হয়েছিল, সেখান থেকে তাদেরকে কৃষি কন্যা হলের মূল ভবনে স্থানান্তর করা হবে।

অন্যদিকে, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ৩৫৮ জন ছাত্রীকে খালেদা জিয়া হলে আসন বরাদ্দ দেওয়া হয়। তবে নির্মাণকাজ শেষ না থাকায় এত দিন তারা গ্র্যাজুয়েট ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের (জিটিআই) অতিথিশালায় আছেন। সম্প্রতি হলে একটি ব্লকের কাজ শেষ হওয়ায় তাদের ওই হলে ওঠার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আগামী ২০ অক্টোবরের মধ্যে।

আন্দোলনকারী এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা আট মাস ধরে হেলথ কেয়ারে আছি। ৪০ জনের একটি গণরুমে মাত্র দুইটি বাথরুম। একই বর্ষের হওয়ায় সময়সূচি এক হওয়ায় প্রতিদিনই আমাদের ভোগান্তি হয়।

আন্দোলনকারী আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘জুনিয়রদের হলে তোলা হবে শুনে আমরা ১০ জনের প্রতিনিধি দল গঠন করি। ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা, প্রক্টর ও প্রাধ্যক্ষের সঙ্গে আলোচনা করলেও তাঁরা জানিয়েছেন, আমাদেরকে কৃষি কন্যা হলের টিনশেডে রাখা হবে। কিন্তু আমাদের দাবি, জিটিআই-এর অতিথিশালায় থাকা জুনিয়রদের হেলথ কেয়ারে এনে আমাদের খালেদা জিয়া হলে তোলা হোক।

কৃষি কন্যা হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ডঃ আনিসুজ্জামান বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে বিষয়টি জানার পর শনিবার সকালেই ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা স্যারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। এরপর হাউজ টিউটরের মাধ্যমে আলোচনা শুরু হয়। এর ধারাবাহিকতায় ১৬ অক্টোবর ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা, প্রক্টরসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এবং ১০ জন শিক্ষার্থীর উপস্থিতিতে এক বিস্তারিত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। সেই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, জানুয়ারি ২০২৬-এর মধ্যে ৫০-৬০ জন শিক্ষার্থীকে টিনশেড অংশে সিঙ্গেল সিটে এবং মে ২০২৬-এর মধ্যে সকল শিক্ষার্থীকে মূল ভবনে স্থানান্তর করা হবে।

তিনি আরও বলেন, হেলথ কেয়ারের শিক্ষার্থীরা এর আগেও মে মাসের এক মিটিংয়ে খালেদা জিয়া হলে যেতে অনীহা প্রকাশ করেছিল। নির্মাণ ঠিকাদার ও প্রকৌশলীদের সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হয়েছি যে জানুয়ারির মধ্যে ভবনের তিন তলার কাজ এবং মে মাসের মধ্যে পাঁচ তলার কাজ সম্পন্ন হবে।

ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডঃ মো শহীদুল হক বলেন, হেলথ কেয়ারের শিক্ষার্থীরা খালেদা জিয়া হলে যেতে চায়। কিন্তু বর্তমানে জিটিআইতে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা যেহেতু তাদের জুনিয়র, তাই তাদের আগে সিট দেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়েই শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছে। তবে বাস্তবতা হলো, জিটিআইতে যারা আছে, তাদের মূল অ্যালটমেন্ট খালেদা জিয়া হলেই। শুরুতে হলে বসবাসের উপযোগী পরিবেশ না থাকায় তারা সাময়িকভাবে জিটিআইতে ছিল। এখন আমরা দ্রুতগতিতে হলটির কাজ শেষ করার চেষ্টা করছি।

তিনি আরও বলেন, আপাতত হেলথ কেয়ারের শিক্ষার্থীদের আরও অন্তত দুই মাস সেখানেই থাকতে হবে। ডিসেম্বরের মধ্যে কৃষি কন্যা হলের চলমান নির্মাণকাজ শেষ হলে কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থীকে সেখানে স্থানান্তর করা সম্ভব হবে।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow

News Desk Chief Editor, Our Voice Online