পবিপ্রবিতে রাতভর র্যাগিংয়ে আইসিইউতে ১, বহিষ্কার ৭
জান্নাতীন নাঈম জীবন, পবিপ্রবি প্রতিনিধি
রাতভর র্যাগিংয়ে পটুয়াখালী বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) অসুস্থ শিক্ষার্থীদের মধ্যে একজনকে বরিশাল শেরই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় হল প্রশাসনের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে অভিযুক্ত হিসেবে শনাক্তকৃত ৭ শিক্ষার্থীকে ১ বছর (২ সেমিস্টার) এর জন্য সাময়িক বহিষ্কার এবং হল থেকে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় (পবিপ্রবি) কর্তৃপক্ষ৷
বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা হলেন ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের জুনায়েদ হোসাইন, তানভির ইসলাম সিয়াম ও প্রিতম কারণ, আইন ও ভূমি প্রশাসন অনুষদের শাওন, সুপেল চাকমা, গোলাম রাব্বি, কৃষি অনুষদের জিহাদ হোসাইন। তারা সবাই ২০২২-২৩ সেশনের শিক্ষার্থী।
আইসিইউতে ভর্তি শিক্ষার্থী হলেন ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের হাসিবুর রহমান হাসিব।
রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলামের অনুমোদনক্রমে রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে উক্ত ঘটনা তদন্তের জন্য ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
উপাচার্য অধ্যাপক কাজী রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা অভিযুক্ত ৭ শিক্ষার্থীকে র্যাগিংয়ের দায়ে আজই ১ বছর (২ সেমিস্টার) এর জন্য সাময়িক বহিষ্কার এবং হল থেকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। বিষয়টি নিয়ে ডিসিপ্লিনারি বোর্ডের সাথে সভা ইতোমধ্যে করা হয়েছে। তাদের সুপারিশক্রমে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে তাদেরকে একাডেমিকসহ অধিকতর শাস্তির আওতায় আনা হবে।
উল্লেখ্য, শনিবার দিবাগত রাত আড়াইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের এম. কেরামত আলী হলে এ ঘটনা ঘটে। এম. কেরামত আলী হলে অবস্থানরত স্নাতক প্রথম বর্ষের (২০২৩-২৪ সেশন) সকল শিক্ষার্থীরা র্যাগিং এর শিকার হয়।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শনিবার দিবাগত গভীর রাত পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এম. কেরামত আলী হলে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের র্যাগ দেওয়া হয়। র্যাগিং চলাকালীন সময়ে হঠাৎ করেই নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে ৩ জন শিক্ষার্থী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। অমানবিক নির্যাতনের কারণে অনেকেই রাতে ঘুমাতে পারেননি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ২০২৩-২৪ সেশনের এক শিক্ষার্থী জানান, আনুমানিক রাত বারোটায় ইমিডিয়েট সিনিয়ররা আমাদের গণরুমে এসে আমাদের সকলের ফোন জমা নিয়ে একটা টেবিলে রেখে দেন। আমাদেরকে কান ধরে উঠা বসা করতে বাধ্য করে, অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে, বিভিন্ন বাধ্যতামূলক নিয়ম বলে, সিগারেট এর ধোয়ায় অস্বস্তিকর পরিবেশ সৃষ্টি করে গণরুমে। এছাড়াও আমাদের জানালায় ঝুলানো থেকে শুরু করে বিভিন্নভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকে।
উক্ত পরিস্থিতির খবর পেয়ে এম. কেরামত আলী হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আবদুল্লাহ আল মামুন এবং সহকারী প্রক্টর মোঃ আব্দুর রহিম ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং গণরুমে ঢুকে র্যাগিং দেওয়ার সাথে যুক্ত দুই জনকে কম্বল মুড়ি দিয়ে থাকা অবস্থায় হাতেনাতে ধরেন এবং ক্যান্টিনে গিয়ে চারজনকে র্যাগিংয়ের দায়ে অভিযুক্ত হিসেবে শনাক্ত করা হয়।
What's Your Reaction?