গোমস্তাপুরে ক্লিনিকে দুই প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ 

Mar 22, 2024 - 19:58
 0  328
গোমস্তাপুরে ক্লিনিকে দুই প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ 
ছবিঃ প্রতিনিধি/ওভি

নুহু আলম গোমস্তাপুর (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) থেকে

চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরে দুই ক্লিনিকে সিজারিয়ান অপারেশন করাতে গিয়ে দুই দিনের ব্যবধানে দুইজন প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।

ভুল চিকিৎসায় তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন স্বজনরা। উপজেলা সদর রহনপুর পৌর এলাকার ডাকবাংলোপাড়ায় অবস্থিত আল মদিনা ক্লিনিকে ১৭ মার্চ সিজারিয়ান অপারেশনের পর গুরুতর অসুস্থ পরি বেগম (১৯) নামে এক প্রসূতি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুই দিন পর ১৯ মার্চ মারা যায়।

এ ঘটনায় তার পিতা বাদী হয়ে ২০ মার্চ গোমস্তাপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। যা তদন্তনাধীন রয়েছে বলে জানিয়েছেন গোমস্তাপুর থানার ওসি চৌধুরী জোবায়ের আহমেদ। 

এ ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই বৃহস্পতিবার রহনপুর পৌর এলাকার খোয়াড় মোড়ে অবস্থিত জমজম নার্সিং হোমে আশা খাতুন নামে এক সিজারিয়ান অপারেশন করা প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। মারা যাওয়া ওই প্রসূতি উপজেলার বাঙ্গাবাড়ি ইউনিয়নের গোয়ালমোড় এলাকার আলমাস আলীর মেয়ে। ঘটনা জানাজানি হলে বৃহস্পতিবার রাতে  ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ ক্লিনিকের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয়।

মারা যাওয়া ওই প্রসূতির পিতা আলমাস আলী জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে তার মেয়েকে সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য জমজম নার্সিং হোমে আনা হয়। সেখানে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ আশাকে ভর্তি করে রোগীর স্বজনদের ৪ ব্যাগ রক্ত ও প্রয়োজনীয় ওষুধ ব্যবস্থা করতে বলে। কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী রক্ত ও ওষুধ ব্যবস্থা করেন তারা।

দুপুর ১টার দিকে রোগীকে সিজারের জন্য অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আসাদুল্লাহ নামে একজন চিকিৎসক তার সিজারিয়ান অপারেশন করেন। সে একটি পুত্র সন্তান জন্ম দেন। তবে অপারেশনের পরই তার প্রচুর রক্তক্ষরণ শুরু হয়।

পরে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ রোগীর অবস্থা স্বাভাবিক করার চেষ্টার এক পর্যায়ে ব্যর্থ হয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিকেলে রামেক হাসপাতালে রেফার্ড করে। সেখানে নেয়া হলে জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করে। বৃহস্পতিবার রাতেই ওই প্রসূতির দাফন সম্পন্ন হয়।

এ প্রসঙ্গে ওই নার্সিং হোমের ম্যানেজার লাল মোহাম্মদ জানান, অপারেশনের পর ওই রোগীর খিচুনি শুরু হলে তাকে রামেক হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। সেখানে তার মৃত্যু হয়। এদিকে, স্থানীয় সাংবাদিকরা ওই নার্সিং হোমে এ বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে তাদের কোন তথ্য দেয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন তারা। ক্লিনিকগুলোতে ঘন ঘন রোগী মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ আবদুল হামিদ জানান, এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত আইন শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভার আলোচনা হয়েছে। সভায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে স্থানীয়ভাবে ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে অভিযান চালানোর সিন্ধান্ত হয়েছে। তিনি আরও জানান, রোগী মৃত্যুর ঘটনায় স্বজনরা স্বাস্থ্য বিভাগ বা থানায় অভিযোগ করতে পারবেন।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow

News Desk Chief Editor, Our Voice Online