একমঞ্চে জুলাইয়ের স্মৃতিচারণ করলেন শিবির- ছাত্রদল নেতারা

ময়মনসিংহ, ১৭ জুলাই (বাকৃবি প্রতিনিধি/আওয়ার ভয়েস) – ‘জুলাই: ইতিহাসের দ্রোহ’ স্লোগানে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) জুলাই অভ্যুত্থানের স্মৃতিচারণ নিয়ে ‘জুলাই রেমিনিসেন্স’ আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে এক মঞ্চে জুলাইয়ের স্মৃতিচারণ করেন বাকৃবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মো. আতিকুর রহমান, যুগ্ম-আহ্বায়ক এস এম শোয়াইব, ছাত্রশিবিরের সভাপতি আবু নাছির ত্বোহা ও সাবেক সভাপতি ফখরুল ইসলাম। এছাড়া বাকৃবির বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ তাদের স্মৃতিচারণ করেন।
বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমনেসিয়াম ইনডোরে ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বাউ সলিডারিটির সোসাইটির অনুষ্ঠানে জুলাই আন্দোলনের আলোকচিত্র প্রদর্শন, কবিতা আবৃত্তি ও জুলাইয়ের স্মৃতিচারণ করা হয়।
এসময় ছাত্র নেতৃবৃন্দ জুলাই আন্দোলনের বিভিন্ন ছবি সম্বলিত ফটো কর্ণার ঘুরে দেখেন এবং অভ্যুত্থানের দিনগুলোর স্মৃতিচারণ করেন। এছাড়া পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রীন ভয়েসের পক্ষ থেকে আয়োজকদের ২০টি গাছের চারা উপহার প্রদান করা হয়।
এসময় বাকৃবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মো. আতিকুর রহমান বলেন, আমাদের রক্তে মিশে আছে একটি নাম ‘বাংলাদেশ’। স্বৈরাচারকে পতনের জন্য এই ছাত্রসমাজকে রাজপথে নামতে হয়েছে, বুকের রক্ত দিতে হয়েছে। যাদের রক্তের বিনিময়ে আমরা ফ্যাসিস্টমুক্ত হয়েছি, যারা আমাদের সাহস জোগিয়েছেন, তাদের সবাইকে আমি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি। আমি বলতে চাই, জুলাই আমাদের সকলের অনুপ্রেরণা। আমার মনে আছে, আমরা যখন আন্দোলনে গিয়েছিলাম একজন রিকশাচালক হাত উঁচিয়ে আমাদের স্যালুট দিয়ে আমাদের অনুপ্রেরণা দিয়েছে। যখন শিক্ষার্থীদের ওপর আক্রমণ হয়েছে শিক্ষকেরা দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়েছেন, যখন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আক্রান্ত হয়েছে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এগিয়ে এসেছে। সুতরাং জুলাই একটি সম্মিলিত প্রয়াস। এটি কোন নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর একক কৃতিত্ব নয়। জুলাইয়ের স্মৃতিচারণ নিয়ে এত সুন্দর আয়োজনের জন্য আয়োজকদের ধন্যবাদ জানাই।
বাকৃবি শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি আবু নাছির ত্ত্বোহা বলেন, জুলাই আন্দোলন হয়েছিল শেখ হাসিনার সমস্ত অন্যায়, অত্যাচার ও ফ্যাসিজম থেকে মুক্তির বহিঃপ্রকাশ। এই আন্দোলনে দেশের সকল শ্রেণি পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেছিল। প্রায় ১৪শ‘ মানুষ শহীদ হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন অনেকে। তবে শহীদরা যে আকাঙ্ক্ষা নিয়ে জীবন দিয়েছিল, তা এখনও পূরণ হয়নি। এখনও আমাদের মাঝে বিভাজন দেখা যাচ্ছে। আমরা জুলাইয়ে যেমন ঐক্যবদ্ধ হয়ে স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়েছি, তেমনি করে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হলে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। যতবার আমরা পিছিয়ে পড়বো, আজকের ফটো কর্ণারের এই ছবিগুলো বারবার আমাদের জুলাইয়ের কথা মনে করিয়ে দিবে।
এসময় বাউ সলিডারিটি সোসাইটি সদস্য আব্দুল্লাহ আফসান বলেন, আমরা চেষ্টা করেছি জুলাইকে আবার পুনর্জীবিত করতে, মানুষের মাঝে জুলাই চেতনা ছড়িয়ে দিতে। আমরা বাকৃবির প্রতিটি সংগঠনকে একত্রিত করার চেষ্টা করেছি। আমরা চাই, বাকৃবির সকল শিক্ষার্থী ও সংগঠন জুলাইকে ধারণ করুক, আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মানে এগিয়ে আসুক। কারণ আমাদের হাতেই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ।
আয়োজক কমিটির আরেক সদস্য ছাব্বির হোসেন রিজন বলেন, নয়া আজাদীর বুদ্ধিবৃত্তিক আন্দোলনকে আরও বেশি সুসংগঠিত করতে, জ্ঞানকে আহরণ করতে বাকৃবির শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে আমরা একটি সুন্দর সমাজ গড়তে চাই। আমরা জ্ঞান দিয়েই পৃথিবী জয় করতে চাই। সেই প্রেক্ষাপট থেকেই বাউ সলিডারিটি সোসাইটির পথযাত্রা। আমরা ইতিহাস, সংস্কৃতি ও রাজনীতি নিয়ে কাজ করতে চাই। আমরা বিশ্বাস করি সুন্দর ও স্বপ্নের বাংলাদেশ বিনির্মানে বাউ সলিডারিটি সোসাইটি কাজ করে যাবে।
What's Your Reaction?






