৪৮ ঘন্টা বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন পবিপ্রবি, ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা 

May 30, 2024 - 04:17
 0  160
৪৮ ঘন্টা বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন পবিপ্রবি, ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা 
ছবিঃ প্রতিনিধি/ওভি

জান্নাতীন নাঈম জীবন, পবিপ্রবি প্রতিনিধি

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পবিপ্রবি) বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। একটু বাতাস হলেই থাকে না বিদ্যুৎ। শিক্ষার্থীরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। প্রশাসনের উদাসীনতার কারণেই এমনটা বার বার হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা। 

সোমবার ঘূর্ণিঝড় রেমাল পটুয়াখালী জেলাসহ বাংলাদেশের অধিকাংশ জেলায় আঘাত হানে। অথচ পবিপ্রবি ক্যাম্পাস এবং আবাসিক হলগুলো বিদ্যুৎ সরবরাহ রোববার রাত থেকেই বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে পবিপ্রবি ক্যাম্পাস এবং আবাসিক হলগুলো অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে।

পবিপ্রবিতে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য জেনারেটর রয়েছে। কিন্তু ঘন্টার পর ঘন্টা বিদ্যুৎ বিভ্রাট হলেও ক্যাম্পাস এবং আবাসিক হলগুলোতে জেনারেটর চালিত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয় না। অথচ প্রতিটি শিক্ষার্থী জেনারেটর বিল বাবদ ১৫০ টাকা ফি প্রদান করে থাকেন। ফি দিলেও বছরের পর বছর শিক্ষার্থীরা জেনারেটরের সেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, "যে জেনারেটর ও বিদ্যুৎ সরবরাহের কেবল রয়েছে তা কৃষি কলেজ সময়ের অর্থাৎ ২০০০ সালের পূর্বের। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পরে কোন জেনারেটর বা বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য নতুন সাবস্টেশন স্থাপন করা হয়নি।"

দুর্যোগ পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী সময়ে বিদ্যুৎ না থাকায় পবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা পড়ালেখা, গোসল, খাওয়া-দাওয়া সবকিছুতেই চরম ভোগান্তিতে পড়ছে। আবাসিক হলগুলোতে দেখা দেয় পানি সংকট এবং খাদ্যাভাব। এমনকি ছিল না কোন আলোর ব্যবস্থা। বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যুৎ এর বিকল্প হিসেবে জেনারেটর থাকার পরেও শিক্ষার্থীদের এমন ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে কেন প্রশ্ন হাজারো শিক্ষার্থীর।

কৃষি অনুষদের শিক্ষার্থী হৃদয় বলেন, “রবিবার রাত আনুমানিক ২টার পর থেকে হলে পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে হলের অধিকাংশ শিক্ষার্থীর গোসল এবং খাওয়া-দাওয়ায় বেগ পেতে হয়েছে। অনেকে বাইরে থেকে খাবার কিনে এনে খেয়েছেন। এমন ভয়াবহ দুর্যোগে যখন সারাদেশ জুড়ে প্রস্তুতি নেয়া হয়েছিল, সেখানে পবিপ্রবি প্রশাসন ছিলেন নীরব দর্শকের মতো।

২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী মাহমুব আলম জয় বলেন, “আমার সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা চলছে। বিদ্যুৎ না থাকায় খাওয়া-দাওয়া ও পড়ালেখা থেকে শুরু করে সবকিছুই বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়াও আমরা একটু বাতাস বা বৃষ্টিতেই বিদ্যুৎহীন অবস্থায় পড়ি। এই ছোট্ট একটি ক্যাম্পাসে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে প্রশাসন বৈদুতিক লাইনগুলোকে সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনা করতে এখনো কোনো উদ্যোগ নেননি। যা খুবই দুঃখজনক।

বিদ্যুৎ বা জেনারেটর সরবরাহের জন্য আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা প্রতি হলে নিজস্ব জেনারেটরের দাবি জানিয়ে বলেন, "আমরা শিক্ষার্থীরা প্রতিবছর প্রায় ১০ লক্ষ টাকা জেনারেটর এর ফি দেওয়া সত্ত্বেও জেনারেটর সুবিধা পাচ্ছি না। দুইদিন ধরে ছাত্রাবাসে বিদ্যুৎ নাই। বিদ্যুৎ না থাকায় বাথরুমে পানি নাই, শিক্ষার্থীরা সারা রাত অন্ধকারে ছিলো। আমাদের ফি দিতে একদিন দেরি হলে পরিক্ষা দিতে দেওয়া হয় না। কিন্তু দুইদিন ধরে জেনারেটর চালানো হচ্ছে না, অনেক অনুষদের পরীক্ষা চলছে। জেনারেটর না চালাতে পারলে ফি নেওয়া বন্ধ করুক।

প্রধান প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার মোঃ ইউনুস শরীফ বলেন, "বিদ্যুৎ বিভাগের দায়িত্বে যে রয়েছে তার সাথে কথা বললে ভালো হবে, প্রধান প্রকৌশলী আসলে জেনেরেটরের দায়িত্বে না৷"

দায়িত্বে কে আছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, "জেনারেটর পরিচালনার জন্য একটা কমিটি রয়েছে তারা জেনারেটরের সকল কিছু পরিচালনা করে।"

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. সন্তোষ কুমার বসু বলেন, "প্রয়োজনীয় মেরামতের জন্য অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। নতুন ১১ কেবি ক্ষমতা সম্পন্ন জেনারেটর কেনার জন্য টেন্ডার করা হয়েছে।"

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow

News Desk Chief Editor, Our Voice Online