সিনিয়র-জুনিয়র অন্তর্কোন্দলে বাকৃবিতে সংঘর্ষ, আহত ৫

Jun 6, 2024 - 12:29
 0  141
সিনিয়র-জুনিয়র অন্তর্কোন্দলে বাকৃবিতে সংঘর্ষ, আহত ৫
ছবিঃ প্রতিনিধি/ওভি

ময়মনসিংহ, ০৫ জুন (বাকৃবি প্রতিনিধি/আওয়ার ভয়েস) অন্তর্কোন্দলের জেরে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) সিনিয়র-জুনিয়র শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটেছে।

বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাজমুল আহসান হলের ভিতর ওই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে ৫ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ৪ জনকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল আলম। সংঘর্ষের এ ঘটনায় ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠনা করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র থেকে জানা যায়, শহীদ নাজমুল আহসান হলের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের গেস্টরুমে মারধর করে ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থীরা। একারণে হলের সিনিয়রদের ওপর ক্ষিপ্ত ছিলেন দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার হলের সিনিয়রদের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হন তারা। এসময় অন্যান্য হল থেকে বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীরা ঝামেলা মেটাতে আসলে তাদের ওপরেও চড়াও হয় দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে ঘটনাটি বিশাল মারামারির আকার ধারণ করে। এসময় হলের ভিতর জানালার কাঁচ ভাংচুর করে শিক্ষার্থীরা।

অন্য একটি সূত্র জানিয়েছে, কিছুদিন ধরে নাজমুল আহসান হলের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রলীগের কর্মীদের সাথে ছাত্রলীগের অন্যান্য বর্ষের শিক্ষার্থীদের হলের সিট সংক্রান্ত কারণে অন্তর্কোন্দল চলে আসছে। এরই জেরে মঙ্গলবার নিজেদের মধ্যে গালাগালি ও কথা কাটাকাটি থেকে এক পর্যায়ে ঘটনা সংঘর্ষে রূপ নেয়। এসময় লাঠিসোটা, ইট-পাটকেল নিয়ে নাজমুল আহসান হল রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। মারামারির সময় হলের বেশ কিছু রুমের জানালা, দরজা ভেঙে ফেলা হয়। মারামারির একপর্যায়ে ছাত্রলীগের সভাপতি পরিস্থিতি শান্ত করতে ঘটনাস্থলে আসলে তাকে উদ্দেশ্যে করেও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয় বলেও জানা যায় ।

সিনিয়র জুনিয়রের এ সংঘর্ষে দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ বর্ষের মোট ৫ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে একজনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল আলম।

তিনি বলেন, কী কারণে ঘটনাটি ঘটেছে আমি এখন বলতে পারছি না। আমরা চার সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। তদন্ত সাপেক্ষে জানা যাবে ঘটনা কি ঘটেছে। এই ব্যাপারে সবার সহায়তা কামনা করছি। চারজন ছাত্রকে আমরা প্রক্টরের হাতে তুলে দিয়েছি।

এদিকে প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, সন্ধ্যা সাতটার কিছু আগে হঠাৎ করে নাজমুল আহসান হল থেকে প্রচন্ড হট্টগোল শব্দ শোনা যায়। এর কিছুক্ষণ পরে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে প্রাণপণে দৌড়ে যেতে এবং তাদের পিছনে আরও কয়েক জনকে ধাওয়া করে যেতে দেখেন তারা। ধাওয়াকারীদের ওই হল এবং পূবালী ব্যাংক সংলগ্ন সড়ক দিয়ে ১২ থেকে ১৫টি মোটরসাইকেলে করে যেতে দেখা যায়। এক একটি মোটরসাইকেলে ২ থেকে ৩ জন করে ছিল এবং প্রত্যেকের হাতেই বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র (রামদা, ছুরি, হকিস্টিক, ক্রিকেট স্ট্যাম্প, সাইকেলের চেইন ইত্যাদি) ছিল। মোটরসাইকেলগুলো নিয়ে তারা বোটানিক্যাল গার্ডেনের সামনে দিয়ে কে আর মার্কেট এবং কৃষি অনুষদের করিডোর হয়ে আব্দুল জব্বার মোড়ের দিকে চলে যায় বলে তারা জানান।

বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য শাখার ডেপুটি চিফ মেডিকেল অফিসার ডা. পার্থ সেন বলেন, আমার কাজ শুরু হয়েছে রাত ৯টা থেকে। আমার আগে বিকাল ৩টা থেকে ডিউটিতে ছিলেন ড. মো. সাদিকুল ইসলাম খান। ডা. সাদিকুল ইসলাম আমাকে যতটুকু জানিয়েছেন, তাতে আহত অবস্থায় কোন শিক্ষার্থী হেলথ কেয়ারে আসেননি। শিক্ষার্থীরা অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে নিজেরাই হয়ত মময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চলে গিয়েছেন এমনটিই জানিয়েছেন আমাকে ডা. সাদিকুল।

ঘটনার বিষয়ের বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ড. মো. আরিফ সাকিল বলেন, হলের নিয়ম-শৃঙখলা ভঙ্গ করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির কারণে ওই ঘটনার সাথে জড়িত দ্বিতীয় বর্ষের চারজন শিক্ষার্থীকে প্রক্টরিয়াল বডির কাছে হস্তান্তর করেছেন হল প্রভোস্ট। বর্তমানে তারা কোতোয়ালী থানায় পুলিশের হেফাজতে আছেন। পরবর্তীতে তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow

News Desk Chief Editor, Our Voice Online