বিনা উদ্ভাবিত শস্যজাত অন্তর্ভূক্ত করণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত
ময়মনসিংহ, ০৮ অক্টোবর (বাকৃবি প্রতিনিধি/আওয়ার ভয়েস) – বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) অবস্থিত বাংলাদেশ কৃষি পরমাণু গবেষণা ইন্সটিটিউটে (বিনা) ‘কিশোরগঞ্জ জেলায় বিনা উদ্ভাবিত জাত ও প্রযুক্তিসমূহের সম্প্রসারণ এবং বিদ্যমান শস্যবিন্যাসে বিনা'র জাতসমূহ অন্তর্ভূক্তিকরণ’ শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার বিনা'র সেমিনার কক্ষে কর্মশালাটির আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে বিনা'র গবেষণা বিভাগের পরিচালক ড. মো. ইকরামুল হকের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিনা'র মহাপরিচালক ড. মো. আবুল কালাম আজাদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রশিক্ষণ ও পরিকল্পনা বিভাগের পরিচালক ড. শরিফুল হক ভূঞা, প্রশাসন ও সাপোর্ট সার্ভিস বিভাগের পরিচালক ড. মো. মনজুরুল আলম মন্ডল এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শস্য) কৃষিবিদ মো. শাহীনুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বিনা'র অন্যান্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাসহ কিশোরগঞ্জ জেলার কৃষক ও শস্য ব্যবসায়ীরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
কর্মশালার শুরুতে বিনার প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগ) ড. রেজা মো. ইমন বিনা উদ্ভাবিত বিভিন্ন শস্যের জাত ও তার গুণাগুণ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। পাশাপাশি কিশোরগঞ্জের ভূমি প্যাটার্ন, চাষ ব্যবস্থাসহ বর্তমান শস্য ও উৎপাদনের অবস্থা তুলে ধরেন। বিনা উদ্ভাবিত শস্যগুলো কিভাবে কিশোরগঞ্জ জেলায় অন্তর্ভুক্ত করলে মোট উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি মাটির স্বাস্থ্য ও গুণাগুণ বজায় থাকবে তার একটি প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন। জেলাটিতে বিনা উদ্ভাবিত জাত ও প্রযুক্তি অন্তর্ভুক্ত করলে সার্বিক উন্নয়ন ও অগ্রগতি নিয়েও আলোচনা করেন। তিনি বলেন, ওই অঞ্চলের শস্যবিন্যাসে বিনা উদ্ভাবিত জাত অন্তর্ভুক্ত করলে ক্রপিং ইন্টেনসিটি ও ফলন বাড়বে। এতে সার্বিকভাবে কিশোরগঞ্জ জেলার উৎপাদনশীলতা বাড়বে।
এরপর মুক্ত আলোচনায় কৃষক, উদ্যোক্তা, বিভিন্ন স্টেকহোল্ডার ও অন্যান্য কৃষি কর্মকর্তা তাদের মতামত উপস্থাপন করেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মনজুরুল আলম মন্ডল বলেন, কিশোরগঞ্জসহ সারা দেশে বিবিন্ন শস্যের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির অনেক সুযোগ রয়েছে। সঠিক শস্য প্যাটার্ন, উন্নত কৃষি প্রযুক্তি ও উন্নত বীজ ব্যবহার করে আমরা বার্ষিক উৎপাদন অনেক বৃদ্ধি করতে পারি। তাছাড়া উৎপাদন পরবর্তী সংরক্ষণ করাও অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আমরা এসব কাজ আরও আধুনিকায়ন করার চেষ্টা করছি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, বিনা উদ্ভাবিত বিভিন্ন শস্যের জাতগুলোর মধ্যে মাঠপর্যায়ে বিভিন্ন সমস্যা দেখা যাচ্ছে। বিশেষভাবে বিনা ধান-২৫ ট্রায়ালে যে ফলন দেখিয়েছে মাঠে তার চেয়ে কিছুটা কম হচ্ছে। তার সবচেয়ে বড় কারণ হলো তীব্র তাপমাত্রা। আমাদের এ বছর আবহাওয়ার বিরূপ প্রভাব দেখেছি, যেখানে অতিরিক্ত তাপমাত্রায় বপন করা ধানে অতিরিক্ত পরিমাণে চিটা এসেছে। বর্তমান পরিস্থিতি ও আবহাওয়া বিবেচনায় আমাদের গবেষণাগুলোর পরিকল্পনা সাজাতে হবে। ঝড়, বৃষ্টি ও তাপমাত্রা সহিষ্ণু ধানসহ অন্যান্য ফসলের জাত আবিষ্কারে আমাদের মনোনিবেশ করতে হবে। দেশের বাড়তি জনসংখ্যার খাদ্যের চাহিদা মেটাতে আমরা বিদ্যমান শস্যগুলোর উৎপাদনশীলতা নিয়ে কাজ করছি। পাশাপাশি ভবিষ্যত বাংলাদেশের আবহাওয়া বিবেচনায় নতুন নতুন জাত আবিষ্কারের কাজ চলমান। আমরা আশা করছি বিনা বিভিন্ন উন্নত ও বিরূপ আবহাওয়া সহিষ্ণু জাত উদ্ভাবন করে দেশের খাদ্য চাহিদা মেটাতে আগের চেয়ে বেশি ভূমিকা রাখবে।
What's Your Reaction?