'ফাস্ট ফুডের বদলে দুগ্ধজাত পণ্যের প্রতি শিশুদের আগ্রহী করতে হবে'

Jun 2, 2025 - 14:17
 0  17
'ফাস্ট ফুডের বদলে দুগ্ধজাত পণ্যের প্রতি শিশুদের আগ্রহী করতে হবে'
ছবিঃ প্রতিনিধি/ওভি

ময়মনসিংহ, জুন (বাকৃবি প্রতিনিধি/আওয়ার ভয়েস) বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা ও ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল হক বলেছেন, যখন একটি শিশুর জন্ম হয়, এর পরপরই তার প্রথম খাদ্য হল দুধ। এটি একটি সর্বোৎকৃষ্ট খাদ্য, যার মাধ্যমে শারীরিক, মানসিক ও মেধার বিকাশ হয়। তাই আমি অভিভাবকদের আহ্বান জানাবো জাঙ্ক ফুড, ফাস্ট ফুডের বদলে দুগ্ধ ও দুগ্ধজাত পণ্যের প্রতি শিশুদের আগ্রহী করে তুলতে হবে। সুস্থ, মেধাবী ও জ্ঞানসম্পন্ন জাতি গঠনে দুধ পানের বিকল্প নেই।

বিশ্ব দুগ্ধ দিবস-২০২৫ উপলক্ষ্যে বাকৃবির ডেয়রি বিজ্ঞান বিভাগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আসুন দুগ্ধশিল্প এবং দুধের প্রভাব উদযাপন করিপ্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ত্রয়োদশ বারের মতো বিশ্ব দুগ্ধ দিবস উদযাপনের অংশ হিসেবে রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন মিলনায়তনে ওই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

এসময় ড. মো. শহীদুল হক আরও বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে স্কুলগুলোতে টিফিন হিসেবে দুধ সরবরাহ করা হয়। আশা করি বাংলাদেশেও এটি খুব শীঘ্রই চালু হবে। দুধের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ভালো জাতের পশু ও পুষ্টিকর খাবারের দিকে মনোনিবেশ করতে গবেষকদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। পাশাপাশি পুষ্টিমান বজায় রাখা ও মূল্য নিয়ন্ত্রণ রাখতে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আমাদের ডেয়রি বিজ্ঞান বিভাগ জনগনের মধ্যে দুধ পানের অভ্যাস ও সচেতনতা গড়ে তোলার লক্ষ্যে গত ১২ বছর ধরে দুগ্ধ দিবস পালন করে আসছে। আমি এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। পাশাপাশি দুগ্ধ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত বিভিন্ন প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের অভিনন্দন জানান তিনি।

বাকৃবির ডেয়রি বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. এ কে এম মামুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পশুপালন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. রুহুল আমিন, নেসলে বাংলাদেশের রেগুলেটরি এন্ড সায়েন্টিফিট এফেয়ার্স প্রধান রেবেকা শারমিন। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাকৃবির ডেয়রি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক (অবসরপ্রাপ্ত) ড. এম এ সামাদ খান, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক (অবসরপ্রাপ্ত) ড. মো. নুরুল ইসলাম, বাংলাদেশ অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি এসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো আবুল হাশেম।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন দুগ্ধ দিবস উদযাপন কমিটির আহবায়ক ও বাকৃবির ডেয়রি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড মো. হারুন- অর- রশিদ এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন দুগ্ধ দিবস উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ও বাকৃবির ডেয়রি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক. মোহাম্মদ আশিকুল ইসলাম। 

এসময় বাংলাদেশ অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি এসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো আবুল হাশেম বলেন, আধুনিক বিজ্ঞানের আলোকে দেখা যায়, গাভীর দুধে থাকা ল্যাকটোজ ও অন্যান্য নিউট্রিয়েন্ট যেমন ক্যালসিয়াম, ভিটামিন বি১২, প্রোটিন ও ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড মস্তিষ্কের বিকাশ ও স্মৃতিশক্তি রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বিশেষ করে ৬০ থেকে ৬৯ বছর বয়সীদের জন্য প্রতিদিন ২ থেকে ৩ গ্লাস দুধ পান স্মৃতিশক্তি হ্রাস এবং দ্রুত বার্ধক্য প্রতিরোধে সহায়ক। গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা নিয়মিত দুধ পান করেন, তাদের সার্বিক স্নায়ুতন্ত্রের কার্যকারিতা দীর্ঘস্থায়ী হয়।

দেশে ডেরি শিল্পের বিকাশ এবং দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্যের গুরুত্ব সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রতি বছর ১ জুন বিশ্ব দুগ্ধ দিবস পালন করে বাকৃবির ডেয়রি বিজ্ঞান বিভাগ। দিবসটি উপলক্ষে সকাল ১০ টার দিকে বাকৃবি চত্বরে অবস্থিত স্কুলসমূহের ২ হাজার ৫০০ শিক্ষার্থীকে দুধ পান করানো হয়। এরপর পশুপালন অনুষদের সামনে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে দিবসের উদ্বোধন করেন বাকৃবির ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা ও ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড মো. শহীদুল হক। এরপর অনুষদীয় ফটক থেকে একটি বর্ণাঢ্য র‍্যালি বের করা হয়। র‍্যালিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন মিলনায়তনে এসে শেষ হয়। এরপর সেখানে দুগ্ধ দিবসের ওপর আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। 

এর আগে শনিবার দুগ্ধ দিবস উপলক্ষে শিশু কিশোরদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও হোম কিচেন ডেয়রি রেসিপি প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।

প্রসঙ্গত, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) উদ্যোগে সর্বপ্রথম ২০০১ সালে বিশ্ব দুগ্ধ দিবস উদযাপন শুরু হয়। এর ধারাবাহিকতায় ২০১৩ সাল থেকে বাংলাদেশেও এই দিবসটি উদযাপন করা হচ্ছে।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow

News Desk Chief Editor, Our Voice Online