পহেলা জুলাই থেকে কর্মবিরতির ডাক বাকৃবি শিক্ষকদের
ময়মনসিংহ, ১০ জুন (বাকৃবি প্রতিনিধি/আওয়ার ভয়েস) – পহেলা জুলাই থেকে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, স্ব-শাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় সংস্থা বা অধিনস্থ প্রতিষ্ঠানসমূহ পেনশন স্কিম ‘প্রত্যয়’ এর অন্তর্ভুক্ত হবে। এর ফলে সরকারি অন্যান্য চাকুরিজীবি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে অর্থনৈতিক ও সামাজিক বৈষম্য তৈরি হবে। এটি বাস্তবায়িত হলে মেধাবী শিক্ষার্থীরা আগামী দিনে শিক্ষকতার মতো মহান পেশায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে।
এজন্য প্রত্যয় স্কিম প্রত্যাহারের দাবিতে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সাথে একাত্মতায় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) শিক্ষক সমিতি তার চলমান প্রতিবাদ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ২৫ থেকে ২৭ জুন অর্ধদিবস ও ৩০ জুন পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করবেন। এরপর পহেলা জুলাই থেকে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালিত হবে। এতে বাধাগ্রস্ত হতে পারে এবছরের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা।
অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত পেনশন স্কিম ‘প্রত্যয়’ এর প্রজ্ঞাপন বাতিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য সুপার গ্রেড কার্যকর ও স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তনের দাবিতে চলমান আন্দোলনের প্রসঙ্গে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠকালে এসব কথা বলেন বাকৃবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. তানভীর রহমান।
সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কমপ্লেক্সে ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাকৃবি শিক্ষক সমিতি। এসময় উপস্থিত ছিলেন বাকৃবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরদারসহ শিক্ষক সমিতির অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
ড. তানভীর রহমান বলেন, ১৩ মার্চ অর্থ মন্ত্রণালয় সংশোধিত গেজেটে ‘প্রত্যয়’ স্কিমকে অন্তর্ভুক্ত করে একটি বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন জারি করে৷ আগামী পহেলা জুলাই থেকে যারা শিক্ষকতায় যোগদান করবেন, তারা এই স্কিমের অন্তর্ভুক্ত হবেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমাজের মধ্যে চরম হতাশা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। এই প্রজ্ঞাপন বাস্তবায়িত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষনা কার্যক্রম পিছিয়ে পড়বে এবং দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির ক্ষেত্র সংকুচিত হবে। এটি আগামী দিনের তরুণ সমাজের স্বার্থরক্ষা তথা উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস ও জাতিকে মেধা শূণ্য করার অপচেষ্টা। এটিকে আমাদের শিক্ষক সমাজ ও সরকারের মুখোমুখি দাঁড় করানোর চক্রান্ত বলে দাবি করেন তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার স্বার্থে অনতিবিলম্ব এই বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, বাকৃবি শিক্ষক সমিতি এককভাবে ও বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সাথে প্রত্যয় স্কিম বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করছে। মার্চ মাস থেকে বিভিন্ন সময় বিবৃতি প্রদান, মানববন্ধন, গণস্বাক্ষর সংগ্রহ, কালোব্যাজ ধারন, মৌন মিছিল, প্রতিবাদ সভা ও অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করে আসছে। দাবি আদায়ে সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে পহেলা জুলাই থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করা হবে। এর ফলে ২০ জুলাই অনুষ্ঠিতব্য কৃষি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা বাধাগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানান তিনি।
এসময় বাকৃবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরদার বলেন, আমরা কর্মবিরতির মধ্যেও বিভিন্ন পর্যায়ের ফাইনাল পরীক্ষা ও অনলাইন ক্লাস চলমান রেখেছি। আমরা কখনোই আমাদের আন্দোলনের জন্য শিক্ষার্থীদের ক্ষতিগ্রস্ত করতে চাই না। সাময়িক এই ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া যাবে বলে আমরা আশা করি।
What's Your Reaction?