দেশের ভোজ্যতেলের আমদানি কমাবে ‘বিনা সরিষা-১১’
ময়মনসিংহ, ০৩ ফেব্রুয়ারি (বাকৃবি প্রতিনিধি/আওয়ার ভয়েস) – দেশের ভোজ্যতেলের চাহিদার প্রায় ৮০ শতাংশই আমদানির ওপর নির্ভরশীল, যা বৈদেশিক মুদ্রায় সরকারের জন্য বিশাল ব্যয়ের বোঝা হয়ে দাঁড়ায়। তবে দেশে উদ্ভাবিত উচ্চফলনশীল সরিষার জাত চাষ করে এই আমদানি নির্ভরতা কমানো সম্ভব। তারই উদাহরণ হিসেবে বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) উদ্ভাবিত ‘বিনা সরিষা-১১’ চাষে এবার ময়মনসিংহের কৃষকদের বাম্পার ফলন হয়েছে।
পরমাণু শক্তির ব্যবহার করে উদ্ভাবিত এই সরিষার জাতটি দেশীয় অন্যান্য জাতের তুলনায় আকারে বড় এবং স্বল্প সময়ে অধিক ফলনশীল। মাত্র দুই মাসের মধ্যে এ সরিষা সংগ্রহ করা যায়, যা কৃষকদের জন্য লাভজনক। সম্প্রতি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার নিজকল্পা গ্রামে ‘বিনা সরিষা-৯, বিনা সরিষা-১১ এবং বারি সরিষা-১৪’ জাতের সরিষার প্রায়োগিক পরীক্ষামূলক চাষ এবং সম্প্রসারণের লক্ষ্যে মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়। বিনা সরিষা-৯, বিনা সরিষা-১১ এবং বারি সরিষা-১৪ এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ফলন বিনা সরিষা-১১ এর। বিনা সরিষা-১১ এর বিঘা প্রতি ৫ থেকে সাড়ে ৫ টন ফলন আশা করছেন কৃষক ও গবেষকরা।
বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের ‘গবেষণা কার্যক্রম শক্তিশালীকরণ প্রকল্প’-এর অর্থায়নে আয়োজিত এই মাঠ দিবসে প্রায় ৮০ জন কৃষক ও কৃষাণী অংশ নেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন বিনার মহাপরিচালক ড. মো. আবুল কালাম আজাদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ফলিত গবেষণা ও সম্প্রসারণ বিভাগের প্রধান এবং মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. ইব্রাহিম খলিল।
মাঠ দিবসে কৃষকদের নিয়ে সরিষা ক্ষেত পরিদর্শন করা হয় এবং রগিংসহ বিভিন্ন চাষাবাদ কৌশল নিয়ে পরামর্শ দেওয়া হয়। সভাপতি ড. মো. ইব্রাহিম খলিল বলেন, ‘বিনা উদ্ভাবিত উচ্চফলনশীল ও স্বল্পমেয়াদী সরিষার জাত চাষ করে কৃষকরা দো-ফসলী জমিতে তিন ফসল উৎপাদন করতে পারবে, যা তাদের আয় বাড়াবে এবং দেশের খাদ্য ও তেল নিরাপত্তায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।’
এই মাঠ দিবসের সফল আয়োজন ও কৃষকদের ব্যাপক সাড়া পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ‘সরিষার নতুন জাতগুলোর ব্যাপক চাষ সম্প্রসারণ হলে দেশের তেলবীজ উৎপাদনে অভাবনীয় অগ্রগতি আসবে এবং আমদানি নির্ভরতা কমবে।’
What's Your Reaction?