ছাত্রলীগ বিহীন ডাইনিংয়ে শান্তিতে খাচ্ছেন বাকৃবি শিক্ষার্থীরা

Aug 20, 2024 - 02:35
 0  17
ছাত্রলীগ বিহীন ডাইনিংয়ে শান্তিতে খাচ্ছেন বাকৃবি শিক্ষার্থীরা
ছবিঃ প্রতিনিধি/ওভি

ময়মনসিংহ, আগস্ট (বাকৃবি প্রতিনিধি/আওয়ার ভয়েস) বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) আবাসিক হলগুলোতে রাজনৈতিক কর্মী দ্বারা সিট বাণিজ্য, ডাইনিংয়ের টাকা আত্মসাৎ, গেস্টরুমে নির্যাতন, র‍্যাগিংসহ নানাবিধ অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। তবে ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকার পতনের পর সারাদেশের মত বাকৃবিতেও নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে ছাত্রলীগ। এর ফলে ছাত্রলীগ না থাকায় উন্নতি হয়েছে হলের ডাইনিংয়ের খাবারে।

ক্যাম্পাসে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা নিজ উদ্যোগে ডাইনিং চালু করেছেন এবং সেখানে পরিবেশন করা খাবারের মান অন্য যে কোন সময়ের চেয়ে ভালো। এতে স্বস্তি প্রকাশ করছেন শিক্ষার্থীরা।

জানা যায়, ১৫ আগস্ট থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলের কিছু সংখ্যক সাধারণ শিক্ষার্থীরা ডাইনিং চালু করেছেন। সেখানে মাত্র ১০০ টাকায় তারা দুই বেলা খাচ্ছেন। খাবারের স্বাদ ও মানে ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে বলছেন শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে দুপুরের আয়োজনে ছিল কোয়ার্টার সাইজের মুরগীর রোস্ট, পোলাও, ডাল দিয়ে মুরগি এবং সবজি। রাতে ছিল ভাত, ডাল, মুরগি অথবা ডিম এবং ভর্তা। অন্যান্য হলগুলোতেও একই অবস্থা। ১৮ আগস্ট বাকৃবি ৬৪তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে বাকৃবির আশরাফুল হক হলে অবস্থানরত ১২৬ শিক্ষার্থী মিলে আয়োজন করে ফিস্টের। যেখানে জবাই করা হয় দুইটি খাসি। এছাড়া আরও ছিল পোলাও, মিষ্টি, পায়েস, সফট ড্রিংক, সবজি, ডাল। শিক্ষার্থীদের চাঁদা এবং হল প্রশাসনের সহায়তায় তারা এ আয়োজন করে।

স্বল্প টাকার মধ্যে অনেক ভালো খাবার খেতে পারছেন বলে উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীরা। আগে যে টাকায় খুব সাধারণ পর্যায়ের নিম্নমানের খাবার পেতেন, একই টাকায় তারা এখন ফিস্ট উদযাপন করছেন। তাই ডাইনিংয়ে খাওয়ার জন্য রীতিমতো ভীড় তৈরি হয় হলগুলোতে। শিক্ষার্থীরা সবাই হলে আসলে খাবারের মান আরও ভালো হবে বলে আশাবাদী তারা। 

শিক্ষার্থীরা জানান, আগে ডাইনিং নিয়ন্ত্রণ করতো ছাত্রলীগের নেতারা। তারা ডাইনিংয়ের টাকা নিজেরা ভোগ করতো। এতে ডাইনিংয়ের খাবারের মান ছিল নিম্নতর। কেউ খেতে চাইতো না। জুনিয়রদের জোর করে ডাইনিংয়ে খাওয়ানো হতো। বাকিরা বাইরের হোটেলে খেতেন। কখনও কখনও পুরো মাসের টাকা নিয়ে ১৫-২০ দিন পরই বন্ধ হয়ে যেত ডাইনিং। এতে বিপাকে পড়তে হতো সাধারণ শিক্ষার্থীদের। ছাত্রলীগের হস্তক্ষেপ থাকায় প্রতিবাদ করারও সাহস পেতেন না তারা। এখন তারা আশা করছেন, হলে ছাত্রলীগ না থাকায় সবাই ডাইনিংয়ে ভালো খাবার পাবেন, সারা মাস ডাইনিং চালু থাকবে এবং সবাই ডাইনিংয়ে খেতে আগ্রহী হবে। 

শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, ছাত্রলীগের নোংরা ছাত্র রাজনীতির কারণে হলে ছিলো গ্রুপিং। এছাড়া বিভিন্ন কারণে কখনো সবাই মিলে ফিস্ট করা হয়নি বলে জানান ওই হলের শিক্ষার্থীরা। ফিস্টের টাকা এবং খাবারেও আগে অধিকার ছিলো না শিক্ষার্থীদের। স্বাধীনভাবে আজকে ফিস্ট করে খুবই উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীরা। সিনিয়র-জুনিয়র একটি সুন্দর সম্পর্ক চান তারা। নোংরা, নির্মম ছাত্র রাজনীতি চান না তারা। ১২০০ একরের সব ক্ষেত্রে থাকবে শুধু শান্তি, কৃষি ও গবেষণায় তারা হবে অগ্রগামী এমনটাই প্রত্যাশা।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow

News Desk Chief Editor, Our Voice Online