বাকৃবির সকল অফিসে প্লাস্টিকের ব্যবহার নিষিদ্ধ: ভিসি

ময়মনসিংহ, ২৭ ফেব্রুয়ারি (বাকৃবি প্রতিনিধি/আওয়ার ভয়েস) – বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া বলেন, আমাদের সবাইকে প্লাস্টিকমুক্ত ক্যাম্পাস গড়তে হবে এবং আমি এই উদ্যোগের সূচনা করছি। এখন থেকেই বাকৃবির সকল অফিসে প্লাস্টিক বোতল ব্যবহার বন্ধের নির্দেশনা প্রদান করা হলো। ভবিষ্যতে কোন অফিসে প্লাস্টিক বোতল পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাকৃবির ফিশারিজ ম্যানেজমেন্ট বিভাগ পরিচালিত ‘ব্রহ্মপুত্র নদে মাইক্রোপ্লাস্টিক দূষণ: মাছ ও জলজ খাদ্য শৃঙ্খলে বিপর্যয়ের আশঙ্কা’ শীর্ষক গবেষণা প্রকল্পের ওপর আয়োজিত একটি কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বৃহস্পতিবার মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অফিসের সম্মেলন কক্ষে এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
তিনি আরও বলেন, মাইক্রোপ্লাস্টিক দূষণের কারণে ভারত ও বাংলাদেশ অধিক ঝুঁকিপূর্ণ। এর ব্যবহারজনিত কারণে খাদ্যশৃঙ্খলে মারাত্মক বিপর্যয় ঘটতে পারে। আমি ব্যক্তিগতভাবে সবাইকে অনুরোধ জানাচ্ছি যে, আজ থেকে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্লাস্টিক ও প্লাস্টিকজাত বোতলের ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। আমি দৃঢ়ভাবে ঘোষণা করছি, আমাদের কেউ যেন ক্যাম্পাসে প্লাস্টিক বা প্লাস্টিকজাত বোতল ব্যবহার না করে। যদি কেউ এটি ব্যবহার করে এবং তা গণমাধ্যমে প্রকাশ পায়, তবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে চিহ্নিত করা হবে।
মাৎস্য বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো রফিকুল ইসলাম সরদারের সভাপতিত্বে এবং প্রকল্পের প্রধান গবেষক অধ্যাপক ড. হারুনুর রশীদের সঞ্চালনায় কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চ শিক্ষা ও গবেষণা কমিটির কো-অর্ডিনেটর অধ্যাপক ড. মো: সামছুল আলম, প্রধান পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক ড. জোয়ার্দার ফারুক আহমেদ, অধ্যাপক ড. মো: আলী রেজা ফারুক, অধ্যাপক ড. মো: ইসমাইল হোসেন, সহযোগী অধ্যাপক ড. কাইজার আহমেদ সুমন সহ অন্যান্য আমন্ত্রিত শিক্ষক-কর্মকর্তা, গবেষক, ছাত্র-ছাত্রী, নীতি-নির্ধারক, পরিবেশবিদ, সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা এবং মৎস্য খাতের সাথে জড়িত বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গ।
কর্মশালায় গবেষণা প্রকল্পের বিভিন্ন দিক, ব্রহ্মপুত্র নদ ও এর আশপাশের জলজ খাদ্য শৃঙ্খলে মাইক্রোপ্লাস্টিক দূষণের প্রভাব এবং এর প্রতিকারের উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। এসময় তিনটি দেশের গবেষকগণ সরাসরি ও ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন। কর্মশালায় অনলাইন জুম প্লাটফর্মে বক্তব্য প্রদান করেন প্রকল্পের সহযোগী গবেষক ভারতের রাজদীপ দত্ত এবং ভুটানের গবেষক গীতা দাহল।
কর্মশালায় প্রধান গবেষক অধ্যাপক ড. হারুনুর রশীদ বলেন, প্রাকৃতিক পানিতে মাইক্রোপ্লাস্টিক দূষণ বিশ্বব্যাপী একটি বড় উদ্বেগ। যেখানে ব্রহ্মপুত্র নদ উল্লেখযোগ্য নেতিবাচক ভূমিকা রাখছে। দক্ষিণ এশিয়া প্লাস্টিক দূষণে বিশ্বে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে এবং গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র ও ইরাবতী নদীর মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ প্লাস্টিক বঙ্গোপসাগরে প্রবাহিত হয়। গবেষণার লক্ষ্য হলো ব্রহ্মপুত্র নদ বরাবর মাছ ও জলজ খাদ্য শৃঙ্খলে আন্তঃসীমান্ত মাইক্রোপ্লাস্টিক দূষণ বিশ্লেষণ করা। প্রথম বছরে, ভুটান, ভারত ও বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মাছ, নদীর পানি ও পলির নমুনা সংগ্রহ করা হয় এবং স্থানীয় জনগণের খাদ্যাভ্যাস ও এক্সপোজার ঝুঁকি মূল্যায়ন করা হয়েছে। দ্বিতীয় বছরে, জলজ খাদ্য শৃঙ্খলে মাইক্রোপ্লাস্টিকের প্রভাব ও শারীরবৃত্তীয় প্রতিক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে।
What's Your Reaction?






