বাকৃবিতে এক বছর ধরে বন্ধ দুই কোটি টাকার পোলট্রি শেড
ময়মনসিংহ, ২৫ ফেব্রুয়ারি (বাকৃবি প্রতিনিধি/আওয়ার ভয়েস) – বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) গবেষণার কাজে এবং ভবিষ্যতে চাকরির ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের হাতে কলমে উন্নত শিক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের পোলট্রি ফার্মে দুটি স্বয়ংক্রিয় পোলট্রি শেড নির্মাণ করা হয়। ২০১৯ সালের ৬ জুলাই শেড দুটি উদ্বোধন করা হয়। শেড দুটি চলমান রাখতে প্যারাগণ পোলট্রি লিমিটেডের সাথে দুই বছর মেয়াদী সম্পূরক চুক্তিও করে পোলট্রি বিজ্ঞান বিভাগ। এই চুক্তির আওতায় ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত চালু ছিল স্বয়ংক্রিয় শেড দুটি। তবে চুক্তিভিত্তিক কার্যক্রম শেষ হওয়ায় দায়িত্ব হস্তান্তর জটিলতার কারণে এক বছর দুই মাস ধরে বন্ধ আছে শেড দুটি। অর্জিত হচ্ছে না কাঙ্খিত লক্ষ্য।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, শেড দুটিতে একসাথে চার হাজার লেয়ার মুরগি ও তিন হাজার ব্রয়লার মুরগি পালন করা যায়। সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থাপনায় এসব পোলট্রি শেডে রোগ বালাইয়ের পরিমাণ যেমন কম হয়, তেমনি উৎপাদনও বাড়ে কয়েকগুণ। বাকৃবির পোলট্রি বিজ্ঞান বিভাগ, বাংলাদেশ পোলট্রি শিল্প সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি), প্যারাগন পোলট্রি লিমিটেড, মালয়েশিয়ার কৃষিভিত্তিক প্রতিষ্ঠান এজিসিও-জিএসআই এবং পোলট্রি কনসালটেন্ট অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট সার্ভিসের অর্থায়নে শেডটি নির্মাণ করতে দুই কোটি টাকা ব্যয় হয় বলে জানা যায়। কিন্তু শেড দুটি চালু হওয়ার পর একটি বড় সময় করোনা মহামারির প্রকোপ ছিল। যার ফলে শেড নির্মাণের প্রকৃত লক্ষ্যও ঠিকভাবে অর্জিত হয়নি।
আরও জানা যায়, প্যারাগন পোলট্রি লিমিটেডের সাথে দুই বছরের চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় বন্ধ হয়ে যায় শেড দুটির কার্যক্রম। এতে অসুবিধায় পড়েন শিক্ষার্থী ও গবেষকরা। তবে শীঘ্রই আবারও শেড দুটি চালু করে গবেষণা কাজের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে পোলট্রি ফার্মের ইনচার্জ প্রভাষক তানভীর আহমেদ বলেন, শেড দুটি চালু করতে আমরা ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছি। কারিগরি কিছু ত্রুটি ও সমস্যা সমাধানে প্রকৌশলীরা কাজ করছেন। আশা করি খুব দ্রুতই কাজ শেষ হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জায়গায় এমন স্বয়ংক্রিয় পোলট্রি শেড থাকা একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ।
বাকৃবির পোলট্রি বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান ড. বাপণ দে বলেন, প্যারাগনের সাথে দুই বছরের চুক্তি ভিত্তিক কাজ শেষ হওয়ার পর পোলট্রি শেড দুটির দায়িত্ব হস্তান্তর করতে বেশ কিছুটা সময় লেগে যায়। শেড দুটি চালু করতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আনুষ্ঠানিক অনুমোদনের অপেক্ষায় আছি। আমরা শেড দুটির কার্যক্রম শুরু করতে প্রস্তুত আছি। লিখিত অনুমোদন পেলেই আমরা দেড় থেকে দুই মাসের মধ্যেই কাজ শুরু করতে পারবো। স্বয়ংক্রিয় শেডগুলো সকল শিক্ষার্থীদের জন্যে উন্মুক্ত থাকবে।
তিনি আরও জানান, শেডগুলো সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে একটি নীতিমালা প্রণয়নের কাজ চলমান রয়েছে। নীতিমালা তৈরি করার এই অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে প্রশাসনের অনুমতিক্রমে পোলট্রি বিজ্ঞান বিভাগের উদ্যোগে ফার্ম ইনচার্জের দায়িত্বে চালু করবো।
What's Your Reaction?