এবারও ঈদ করতে পারছেন না দুই শতাধিক পরিবার
নড়াইল, ১৬ জুন (জেলা প্রতিনিধি/আওয়ার ভয়েস) – নড়াইলের কালিয়া উপজেলার পেড়লী গ্রামে আজাদ শেখ (৩৭) হত্যাকান্ডের ঘটনায় এবারও পবিত্র ঈদুল আজহা বাড়িতে করতে পারছেন না দুই শতাধিক পরিবার।
অভিযোগ রয়েছে, প্রতিপক্ষের লোকজনের বাধার কারণে প্রায় এক বছর বাড়িঘর ছাড়া আজাদ হত্যা মামলার আসামিরা। শনিবার বেলা ১১টার দিকে দুই শতাধিক পরিবার বাড়িতে উঠতে চায়লেও বাদীপক্ষের বাধার কারণে আসামিপক্ষ শহিদুল ইসলামসহ তার লোকজন বাড়িতে উঠতে পারেননি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফলে ঈদুল ফিতরের মতো এবার ঈদেও আত্মীয়-স্বজন এবং ভাড়া বাড়িতে ঈদ করতে হবে প্রায় ৫০০ নারী-পুরুষ ও শিশু-কিশোরকে। এ নিয়ে দুইপক্ষের লোকজনের মধ্যে শনিবার দিনভর চরম উত্তেজনা দেখা যায়।
নিহত আজাদের ভাই সাজ্জাদ শেখ ও উজ্জ্বলের নেতৃত্বে তাদের লোকজন ঢাল, সড়কি, ধারালো অস্ত্রসহ দেশি অস্ত্র নিয়ে পেড়লী গ্রামের বিভিন্ন এলাকায় মহড়া দিয়েছে। শহিদুল ইসলামের লোকজনকে বাড়িতে আসতে দেয়নি বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।
এ ব্যাপারে শহিদুল ইসলাম বলেন, আমাদের লোকজনকে হত্যার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। আমরা শনিবার সকালে নিজেদের বাড়ি প্রবেশের জন্য ইছামতি এলাকা দিয়ে বাড়ির দিকে এগোনোর চেষ্টা করলেও সাজ্জাদ শেখসহ তার লোকজন বাধা দিয়েছে। আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে প্রতিপক্ষ সাজ্জাদ শেখের লোক জিহাদুল (১৬) ও টুটুল মোল্যা (১৫) ব্যাগে বোমা ভরে ইছামতি এলাকার দিকে আসে। খবর পেয়ে বাশুয়াড়ি ক্যাম্পের পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে ওই দুইজনকে আটক করে।
এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের জের ধরে ২০২৩ সালের ২০ জুলাই সন্ধ্যায় আজাদ শেখ হত্যাকান্ডের ঘটনায় শহিদুল ইসলামকে প্রধান আসামি করে ২০ জনের নামে কালিয়া থানায় মামলা দায়ের হয়। আসামিরা বর্তমানে জামিনে মুক্ত আছেন।
আসামিপক্ষের লোকজন জানান, আজাদ শেখ হত্যাকান্ডের পর বাদীপক্ষের লোকজন তাদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ, ভাংচুরসহ ব্যাপক তান্ডব চালায়। হামলার ভয়ে দুই শতাধিক পরিবার বাড়িঘর ফেলে প্রায় এক বছর অন্যত্র বসবাস করছেন।
তবে, আজাদ শেখ হত্যা মামলার বাদী সাজ্জাদ জানান, প্রতিপক্ষের লোকজনকে বাড়িঘরে উঠতে কোনো বাধা দেয়া হয়নি। তারা নিজের ইচ্ছায় বাড়িঘর ছেড়ে আমাদের ওপর দোষ চাপানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে। আসামিপক্ষের লোকজন এলাকায় অশান্তি সৃষ্টি করার পাঁয়তারা করছে।
এ ব্যাপারে পেড়লী পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক আজিজ জানান, পেড়লী এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। কেউ আইন-শৃংখলার অবনতি করতে চায়লে তাকে ছাড় দেয়া হবে না।
What's Your Reaction?