বাকৃবিতে ‘নস্টালজিয়ায় বাংলা’ ফিরে এলো পুরনো দিনের স্মৃতি

ময়মনসিংহ, ০৮ আগস্ট (বাকৃবি প্রতিনিধি/আওয়ার ভয়েস) – আবহমান বাংলার হাজার বছরের ঐতিহ্য আর চিরচেনা রূপ আজ হারিয়ে যেতে বসেছে নগরায়ন আর প্রযুক্তির ছোঁয়ায়। তারপরও একটুখানি বিশ্রামে বা মনের অজান্তেই ফেলে আসা শৈশবের সোনালি দিনগুলোর স্মৃতিতে ফিরে যান না এমন মানুষ পাওয়া ভার। এবার বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) সেই পুরোনো দিনগুলো যেন ফিরে এলো ‘টিম উৎসব’ এর হাত ধরে।
বাংলাদেশি সংস্কৃতি, ইতিহাস ও ঐতিহ্যের নানা দিক নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা আর পুরোনো প্রজন্মকে তাদের শৈশবের সময়গুলোতে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে আয়োজন করা হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান 'নস্টালজিয়ায় বাংলা'।
শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৫ টা থেকে শুরু হয়ে রাত সাড়ে ৯ টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চ প্রাঙ্গণে ওই অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। অনুষ্ঠানে রাখা হয় গ্রাম বাংলার মেলার আয়োজন। যেখানে দেশ ও দেশের বাইরের বিভিন্ন ধরনের খাবারের স্টল, গহনা, হস্তশিল্প ও ঘর সাজানোর নান্দনিক উপকরণ এবং হাতে মেহেদি সাজানোর কর্নার ছিল।
অনুষ্ঠানে আরও ছিল পুরনো দিনের সিনেমার গান, নাচ, আবৃত্তি, বিশেষ ম্যাগাজিন শো- সহ নানা ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন। এছাড়াও বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে ছিল 'র্যাফেল ড্র'।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে 'র্যাফেল ড্র'-তে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। এছাড়াও বিভিন্ন সেগমেন্টে সেরা উপস্থাপকদের পুরস্কার প্রদান করা হয়।
এ বিষয়ে টিম উৎসবের উদ্যোক্তারা বলেন, প্রযুক্তির দ্রুত বিকাশের কারণে শৈশবের অনেক সরল বিনোদন ও ঐতিহ্য আজ অনেকটাই বিলুপ্তির পথে। টিম উৎসবের এই আয়োজন সেই শূন্যতা পূরণে একটি নতুন পথ তৈরি করেছে। তারা চায় সবাই ফিরে যাক সেই দিনে, যখন সাদা পর্দায় সিনেমা দেখার জন্য জমা হতো ভীড়, চিঠি লেখা ছিল আবেগের প্রধান মাধ্যম, বিকেলের সময় কাটত লাটিম আর কানামাছির সঙ্গে, আর প্রিয় গানের সুরে ভরে যেত রেডিও ও ক্যাসেট প্লেয়ার।
তারা আরও বলেন, ‘আমাদের এই ‘নস্টালজিয়ায় বাংলা’ মূলত প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের সেতুবন্ধন গড়ে তোলা, যাতে শিকড় ভুলে না যায়। আমরা চাই স্মৃতির সোনালী দিনগুলোকে নতুনভাবে উপস্থাপন করে সবাইকে ঐতিহ্যের কাছে আরো কাছে নিয়ে আসতে।’
অনুষ্ঠানটি আয়োজনের বিষয়ে টিম উৎসবের সাধারণ সম্পাদক নুবাহ নাশিতা ফারিহাত বলেন, ‘এই আয়োজনের মাধ্যমে শুধুমাত্র পুরোনো দিনের রোমন্থন নয়, নতুন প্রজন্মকে ঐতিহ্যের গর্বের সাথেও পরিচয় করিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতি ভালোবাসা ও সম্মান গড়ে তোলার এক অসাধারণ উদ্যোগ হিসেবে টিম উৎসবের এই অনুষ্ঠান প্রশংসিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।’
What's Your Reaction?






