নির্বাচন কর্মকর্তার ঘুষের প্রতিবাদ, মানববন্ধন ও বিক্ষোভ

Mar 2, 2025 - 18:45
 0  8
নির্বাচন কর্মকর্তার ঘুষের প্রতিবাদ, মানববন্ধন ও বিক্ষোভ
ছবিঃ প্রতিনিধি/ওভি

ফরহাদ খান, নড়াইল
নড়াইলের কালিয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জান্নাতুল ফেরদৌসের ঘুষ নেয়ার প্রতিবাদ করায় পুরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্যসহ বিএনপি নেতাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার কালিয়া উপজেলার চাঁচুড়ী বাজার এলাকায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন এলাকাবাসী। তারা নির্বাচন কর্মকর্তার বিচারসহ দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার এবং কারাবন্দী দুইজনের অবিলম্বে মুক্তি দাবি করেন। কারাগারে থাকা আনিস শেখ পুরুলিয়া ইউপির ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য এবং মিল্টন মোল্যা পুরুলিয়া ইউনিয়ন বিএনপি ও চাঁচুড়ী বাজার বণিক সমিতির প্রচার সম্পাদক।
মানববন্ধনকারীদের অভিযোগ, ২৭ ফেব্রুয়ারি দুপুরে কালিয়া উপজেলার পুরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদে ভোটার হালনাগাদের কাজ চলছিল। সেখানে কালিয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জান্নাতুল ফেরদৌস উপস্থিত ছিলেন। ভোটার হতে আসা সাধারণ মানুষকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করে ঘুষ নিচ্ছিলেন নির্বাচন কর্মকর্তা জান্নাতুল ফেরদৌসসহ তার লোকজন। এ সময় পরিষদে অবস্থানরত ইউপি সদস্য আনিস শেখ ও মিল্টন ঘুষ নেয়ার কাজে বাধা দেন। একপর্যায়ে ঘুষের টাকা ফেরত দিতে বাধ্য হন নির্বাচন কর্মকর্তাসহ ওই অফিসের সাকিল নামের আরেকজন। এরপর টাকা ফেরত দেয়ার ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। অথচ ওই দিন ঘটনাস্থল থেকে কালিয়া থানায় গিয়ে নির্বাচন কর্মকর্তা বাদী হয়ে মামলা করেন। সেই মামলায় ২৭ ফেব্রুয়ারি রাতেই ইউপি সদস্য আনিস ও মিল্টনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
চাঁচুড়ী বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ছাত্রদলের সাবেক নেতা আবিদ হাসান সবুজ বলেন, মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে; সরকারি কাজে বাধা এবং সরকারি কর্মকর্তাদের মারধর করা হয়েছে। বাস্তবে এ ধরণের কোন ঘটনা ঘটেনি। অন্যায়-দুর্নীতি করে তারা ঘুষ নিলেন, সেই টাকা ফেরতও দিয়েছেন। উল্টো থানায় গিয়ে দুইজনের নামে মামলা করলেন! এ কোন ধরণের নিয়ম? আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আনিস ও মিল্টনকে মুক্তি না দিলে আমরা নির্বাচন অফিস ঘেরাও করব।
এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন পুরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম মনি, কালিয়া উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্মসাধারণ সম্পাদক আমিন বিশ্বাস, সাংগঠনিক সম্পাদক নেছার উদ্দিন, আনিস শেখের মেয়ে মারিয়া ইসলাম তিসা, স্ত্রী রহিমা বেগমসহ অনেকে।
এ ব্যাপারে কালিয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জান্নাতুল ফেরদৌসের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও নম্বরটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুস ছালেক বলেন, আমি যতটুকু জানি; ভোটার হালনাগাদের সময় ইউপি সদস্য আনিস বারবার অপ্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিদের ভোটার করার জন্য সংশ্লিষ্টদের চাপ দেন। এ কাজে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বাধা দেন। তখন ইউপি সদস্যসহ তার সঙ্গীরা পরিকল্পিতভাবে নির্বাচন অফিসের এক আউটসোর্সিং কর্মীর সঙ্গে টাকা-পয়সার লেনদেন করেন বলে শুনেছি। কেউ কোন অনিয়ম করে থাকলে আমাদের কাছে অভিযোগ দিলে আমরা ব্যবস্থা নেব। কিন্তু সরকারি কাজ করার সময় ওই ছেলেকে তারা মারধর করেছেন। একই সঙ্গে তারা কালিয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে আটকে কিছু অপ্রাপ্তবয়স্ক ভোটারদের ফরমে স্বাক্ষর নিয়েছেন।
কালিয়া থানার ওসি রাশিদুল ইসলাম বলেন, নির্বাচন কর্মকর্তার করা মামলায় গত ২৭ ফেব্রুয়ারি রাতে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলার তদন্ত চলছে।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow

News Desk Chief Editor, Our Voice Online