যুক্তরাজ্যের হাউজেস অফ পার্লামেন্টে গণহত্যা দিবস পালিত
লন্ডন, ২৬ মার্চ (বিশেষ প্রতিনিধি/আওয়ার ভয়েস) – সোমবার লন্ডনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের আয়োজনে গণহত্যা দিবস উপলক্ষ্যে হাউজেস অফ পার্লামেন্টে ’’রিমেম্বারিং দ্য বাংলাদেশ জেনোসাইড ১৯৭১ - দ্য রোড টু ইন্টারন্যাশনাল রিকগনিশন'’ শীর্ষক স্মারক ইভেন্টে অনুষ্ঠিত হয়।
ব্রিটিশ লর্ড সভার সিনিয়র সদস্য লর্ড রামি রেঞ্জার এবং অনুষ্ঠানের হোস্ট ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের নয় মাসব্যাপী গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে কাজ করতে তাঁর সমর্থন ব্যক্ত করেছেন। লর্ড সভার এই প্রবীণ সদস্য এবিষয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে একটি বিল উত্থাপনেরও প্রতিশ্রুতি দেন।
অনুষ্ঠানে ব্রিটিশ বাংলাদেশের এপিপিজির ভাইস চেয়ার টম হান্ট এমপি বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের সময় ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে যে নৃশংসতা ঘটেছিল তা একটি অবিস্মরণীয় ঘটনা ছিল”। তিনি আশ্বাস দেন যে, তিনি বাংলাদেশ হাইকমিশন লন্ডন এবং ব্রিটিশ বাংলাদেশীদের সাথে নিয়ে ১৯৭১ সালের গণহত্যা সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করতে এবং ব্রিটিশ পার্লামেন্টে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য একটি নতুন প্রস্তাব উত্থাপন করার জন্য কাজ করবেন।
ভারতীয় বংশোদ্ভূত কনজারভেটিভ লিঙ্কের চেয়ারম্যান লর্ড সুরি ১৯৭১ সালে ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশে গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির পক্ষে সংসদে নতুন প্রস্তাব আনতে যুক্তরাজ্যের নীতিনির্ধারকদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, পরাজিত পকিস্তান বাহিনী ঢাকায় ভারত-বাংলাদেশ যৌথ কমান্ডের কাছে কিভাবে আত্মসমর্পন করেছিল এর বিস্তারিত জেনেছেন তার চাচাত ভাই অরোরার কাছ থেকে।
স্বাগত বক্তব্যে লন্ডনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সাইদা মুনা তাসনিম ১৯৭১ সালের জুন মাসে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে 'পূর্ব বাংলায় গণহত্যা বন্ধ করা এবং বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়ার' প্রথম দিনের প্রস্তাবের কথা স্মরণ করিয়ে বাংলাদেশের গণহত্যাকে স্বীকৃতি দিতে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে একটি নতুন প্রস্তাবের আহ্বান জানিয়ে বলেন, “পিটার শোর, এমপি, যিনি ১৯৭১ সালে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন, পূর্ব পাকিস্তানে সংঘটিত নৃশংসতার নিন্দা জানিয়ে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেছিলেন, তার পরে আরেকটি প্রস্তাব উত্থাপন করেছিলেন, যা অ্যাকশন বাংলাদেশ এবং সমর্থন করেছিলেন ২৩৩ জনেরও বেশি ক্রস-পার্টি সদস্য, তারা পূর্ব বাংলায় গণহত্যার বন্ধ এবং বাংলাদেশকে স্বীকৃতির আহ্বান জানিয়েছেন”।
এছাড়ও আলোচনায় আরো অংশ নেন ড. নাজিয়া এম হাবিব ফাউন্ডার এন্ড রিসার্চ সেন্টার ডিরেক্টর ফর রিসাইলেন্স এন্ড সাসটেনেবল ডেভলপমেন্ট (সিআরএমডি) অব ল্যান্ড ইকনমি কেমব্রিজ ইউনিভারসিটি, প্রফেসর মোহাম্মদ শহাব উদ্দিন, প্রফেসর, ইন্টারন্যাশনাল ল এন্ড হিউম্যান রাইট বার্মিংহ্যাম ইউনিভারসিটি, ভ্যাল হার্ডিং, ট্রাষ্ট্রি, স্বাধীনতা ট্রাষ্ট যিনি ১৯৭১ সালে ভারতে বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরে একজন নার্স হিসেবে কাজ করেছেন। আনসার আহমেদ উল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক, সর্ব ইউরোপীয় একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, সৈয়দ মোজাম্মিল আলী, প্রেসিডেন্ট, ষ্টাডি সার্কল, প্রবাসী মুক্তিযোদ্ধা সুলতান মাহমুদ শরীফ, এম এ আজিজ অক্সফাম প্রমুখ।
বাংলাদেশ হাইকমিশন, লন্ডন কর্তৃক আয়োজিত বাংলাদেশ গণহত্যা দিবস ২০২৪-ইভেন্টে ব্রিটিশ লর্ড সভার সদস্য, ব্রিটিশি এমপি, শিক্ষাবিদ, আইন বিশেষজ্ঞ, মুক্তিযোদ্ধা এবং বিভিন্ন শ্রেণী পেশার ব্রিটিশ বাঙালিরা অংশ নেন।
What's Your Reaction?