নিয়মিত দুগ্ধপানে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে ৪০ ভাগ

Jun 2, 2024 - 04:12
 0  283
নিয়মিত দুগ্ধপানে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে ৪০ ভাগ
ছবিঃ প্রতিনিধি/ওভি

ময়মনসিংহ, ০১ জুন (বাকৃবি প্রতিনিধি/আওয়ার ভয়েস) দুধপান নিয়ে আমাদের মাঝে বেশ কিছু ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে। অনেকে মনে করেন দুধ খেলে ক্যান্সার হয়। এটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। বরং দুধে বিদ্যমান কিছু উপাদান ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে। এছাড়া দুধ ডায়াবেটিস রোগের জন্যও উপকারী। দৈনিক ২৫০ মিলিলিটার দুধপান করলে ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা ৪০ শতাংশ কম থাকে।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) বিশ্ব দুগ্ধ দিবস - ২০২৪ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন কালে এসব কথা বলেন উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ও বাকৃবি ডেয়রি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোহেল রানা সিদ্দিকী। শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তনে ওই সভার আয়োজন করে ডেয়রি বিজ্ঞান বিভাগ। 

তিনি আরও বলেন, অনেকেই মনে করেন দুধ খেলে গ্যাস্ট্রিক ও পেট খারাপসহ অন্যান্য সমস্যা হয়। দুধের মধ্যে গ্যাস্ট্রিক বা অন্যান্য সমস্যা হওয়ার মতো কোন উপাদান নাই। মূলত ল্যাকটোজ অসহিষ্ণুতার জন্য এই সমস্যাগুলো কিছু মানুষের মধ্যে দেখা যায়। ছোটবেলা থেকে দুধ খাওয়ার অভ্যাস না থাকার কারণে এই সমস্যাটি হয়। তবে এর সমাধান হিসেবে ল্যাকটোজ ছাড়া দুধগ্রহণ বা বিভিন্ন চিকিৎসার ব্যবস্থাও রয়েছে। দুধ গরম করলে এর গুণাগুণ নষ্ট হয় এটিও একটি ভিত্তিহীন ধারণা। দুধে উপস্থিত ক্ষতিকর জীবানুকে ধ্বংস করার জন্য তাপ দেওয়া প্রয়োজন।

এসময় তিনি বৈশ্বিক খাদ্য হিসেবে দুধের প্রয়োজনীয়তা, বিশ্ব দুগ্ধ দিবস উদযাপনের ইতিহাস ও বর্তমান পরিস্থিতি ও টেকসই খাদ্য নিরাপত্তায় দুধের অবদান নিয়ে আলোচনা করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেয়রি বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান ড. এ. কে. এম. মাসুমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাকৃবির ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল আউয়াল। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পশুপালন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. ছাজেদা আখতার ও নেসলে বাংলাদেশের কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স বিভাগের লিগ্যাল রেগুলেটরি অ্যান্ড সায়েন্টিফিক পরিচালক দেবব্রত রায় চৌধুরী। এছাড়া বিশ্ব দুগ্ধ দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ও ডেয়রি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. হারুন-অর-রশিদ, ডেয়রি বিজ্ঞান বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. মো. নুরুল ইসলাম ও অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. এম. এ. সামাদ খান, বিভিন্ন দুগ্ধজাত শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিবৃন্দ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক এবং পশুপালন অনুষদের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. মো. আব্দুল আউয়াল বলেন, মানসম্পন্ন খাবারের কথা বলতে গেলে শুরুতেই দুধের নামটি আসবে। মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় সকল পুষ্টিগুণ দুধে উপস্থিত। একারণেই পৃথিবীর অনেক দেশে দুধ পানির চেয়ে সহজলভ্য। দুধকে সকলের কাছে সহজলভ্য করার জন্য আমাদের দেশেও এরকম পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। বাজারের বিভিন্ন ক্ষতিকারক পানীয় থেকে আমাদের দূরে থাকতে হবে। দুগ্ধজাত পণ্যের মাধ্যমে পানীয়ের চাহিদা পূরণের ব্যবস্থা করতে হবে।

এর আগে দিবসটির শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গনে অবস্থিত বিভিন্ন বিদ্যালয়ের প্রায় ১ হাজার ৬শত শিশুকে দুধ পান করানো হয়। এরপর পশুপালন অনুষদ থেকে আনন্দ র‌্যালি বের করা হয়। 

এছাড়া দিনব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিকাল ৩টা থেকে পশুপালন অনুষদের শিক্ষার্থীদের জন্য ক্যারিয়ার পরামর্শ বিষয়ক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম সম্মেলন কক্ষে ওই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার গড়ার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়।

এবারের বিশ্ব দুগ্ধ দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল বিশ্বের মানসম্পন্ন পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে ডেয়রি শিল্পের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow

News Desk Chief Editor, Our Voice Online