ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ, প্রশাসন উদাসীন

May 27, 2025 - 00:36
 0  8
ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ, প্রশাসন উদাসীন
ছবিঃ প্রতিনিধি/ওভি

জান্নাতীন নাঈম জীবন, পবিপ্রবি প্রতিনিধি

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পবিপ্রবি) শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও এনিম্যাল সায়েন্সেস অ্যান্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের (ডিভিএম) ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী তানভীর আহমেদ সজীবের বিরুদ্ধে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎ, চাঁদাবাজি ও একাধিক অপকর্মের অভিযোগ উঠেছে। তবে প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা ও উদাসীনতার কারণে তার বিরুদ্ধে এখনও কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

সম্প্রতি, তানভীর আহমেদ সজীবের শেষ ডিফেন্স পর্ব চলাকালে তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ সামনে আসে। অভিযোগ রয়েছে, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ডাইনিং কর্মচারীকে চাকরি স্থায়ী করার প্রলোভন দেখিয়ে ২০২৪ সালে ৩৩ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। কিন্তু পরবর্তীতে টাকা ফেরত দেওয়া হয়নি, চাকরিও নিশ্চিত করা হয়নি। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন দোকান থেকে বাকিতে পণ্য কিনে টাকা পরিশোধ না করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। পাশাপাশি, ক্যাম্পাসের বিভিন্ন প্রকল্প থেকে বড় অঙ্কের টাকা চাঁদা আদায়ের অভিযোগও উঠেছে তার বিরুদ্ধে।

শুধু আর্থিক নয়, শারীরিক নির্যাতনেরও একাধিক অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাতভর র‍্যাগিং ও হামলা চালানোর অভিযোগ করেছেন একাধিক ভুক্তভোগী। যদিও প্রশাসন এসব ঘটনা সম্পর্কে জানার পরও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে কোন কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

এদিকে অভিযোগ রয়েছে, বিএনপি-ঘনিষ্ঠ কিছু শিক্ষকের ছত্রচ্ছায়ায় জুলাই আন্দোলনের পরও অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা সজীব বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস, পরীক্ষা ও অন্যান্য কার্যক্রমে স্বাভাবিকভাবে অংশ নিচ্ছেন। অর্থ আত্মসাৎ, চাঁদাবাজি ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের হুমকি দেওয়ার মতো গুরুতর অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও তার কোন বিচার হয়নি।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী কিচেন হেল্পার সাহিদা বেগম বলেন, “আমার চাকরি স্থায়ী করার জন্য গত বছর তৎকালীন ডাইনিং ম্যানেজার আমাকে ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সজীবের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন। এরপর সজীব আমার কাছে ৫০,০০০ টাকা দাবি করে এবং টাকা আদায়ের জন্য বারবার ফোন করে ও আমার বাড়িতে গিয়ে চাপ প্রয়োগ করে। বাধ্য হয়ে আমি জমানো টাকা থেকে কিছু দেই এবং ব্যাংক লোন করে তাকে ৩০,০০০ টাকা দেই। কিন্তু টাকা নেওয়ার পর সজীব আমার সঙ্গে সব যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়, আর আমার চাকরিও স্থায়ী হয়নি।

তিনি আরও বলেন, “সম্প্রতি ক্যাম্পাসে সজীবের সঙ্গে দেখা হলে সে আমাকে চিনতে অস্বীকার করে এবং দাবি করে যে আমার কাছ থেকে কোন টাকা নেয়নি। এই অবস্থায় আমি নিরুপায় হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ন্যায়বিচার চেয়েছি।

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি তানভীর আহমেদ সজীবকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি মুঠোফোন রিসিভ করেননি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আবুল বাশার খান বলেন, “এ বিষয়ে আমাকে পূর্বে জানানো হয়েছিল। তবে এখনো লিখিত বা মৌখিক কোনো অভিযোগ কেউ করেনি। কেউ অভিযোগ দায়ের করলে তদন্ত সাপেক্ষে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস. এম. হেমায়েত জাহান বলেন, “বিষয়টি নিয়ে এখন পর্যন্ত কোন লিখিত অভিযোগ আসেনি। তবে ভুক্তভোগীরা যদি অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে প্রশাসন বরাবর লিখিত অভিযোগ করে, তাহলে সেটি ডিসিপ্লিনারি বোর্ডের মাধ্যমে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow

News Desk Chief Editor, Our Voice Online