ক্যাম্পাস ছাড়তে বাধ্য হলেন শিক্ষার্থীরা, হল সিলগালা

Jul 24, 2024 - 16:49
 0  68
ক্যাম্পাস ছাড়তে বাধ্য হলেন শিক্ষার্থীরা, হল সিলগালা
ছবিঃ প্রতিনিধি/ওভি

ময়মনসিংহ, জুলাই (বাকৃবি প্রতিনিধি/আওয়ার ভয়েস) অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ও শিক্ষার্থীদের বাধ্যতামূলক হল ত্যাগের নির্দেশনা দিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) প্রশাসন।

ওই নির্দেশনা বাতিলের দাবিতে বুধবার প্রায় ৫ ঘণ্টা যাবত আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কাছে হলে থাকার আশ্বাস পেলে আন্দোলন থামান তারা। তবে গভীর রাত থেকেই হল ছাড়তে শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এমনকি বৃহস্পতিবার ভোর ৪টা থেকে হল ছাড়ার উদ্দেশ্যে ব্যাগপত্র হাতে বের হতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থীকে হল ছাড়ার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তাঁরা জানান, 'আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছি বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার মধ্যে হল না ছাড়লে হলে পুলিশ ঢুকিয়ে শিক্ষার্থীদের বের করা হবে। এদিকে সারাদেশে শাট ডাউন কর্মসূচি চলছে। একারণে শাট ডাউন শুরু হওয়ার আগেই হল থেকে চলে যাচ্ছি আমরা।'

সরেজমিনে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি হলে মাইকিং করে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগ করার জন্য বলা হয়। পরে প্রতিটি হলে পুলিশ গিয়ে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগ করার কথা বলেন। শেষমেষ হল ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। এরপরে হলের প্রতিটি কক্ষ সিলগালা করে দেওয়া হয়।

প্রক্টরের আশ্বাসের পরেও হল ছাড়ার বিষয়ে এক শিক্ষার্থী বলেন, 'গতকাল রাতে প্রক্টরের দেওয়া আশ্বাস নিয়ে নিশ্চিন্তায় ছিলাম। আজ আবার শুনলাম যে হল বাধ্যতামূলক ছাড়তে হবে। আমার বাড়ি চট্টগ্রাম। এখন আমি ট্রেন কিংবা বাস কিছুই পাবো না। পাশাপাশি চলছে শাট ডাউন। আমি এখন নিরুপায়।'

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মো. আজহারুল ইসলাম বলেন, 'জাতীয় পর্যায়ে এই মুহূর্তে সব বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ। আজ ১২টার পর অফিসিয়ালি বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়েছে। জেলা প্রশাসন দুপুর ১২টার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত আছে। জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে কিছু পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী আছে কি না সেটি দেখতে এসেছে। যারা ক্যাম্পাসে ছিলো পুলিশ তাদেরকে চলে যেতে বলেছেন। শিক্ষার্থীরা জেলা প্রশাসনকে সহযোগিতা করেছে। তারা কোনো ধরণের বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি ছাড়াই বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে চলে গেছে।'

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এমদাদুল হক চৌধুরী বলেন, 'এই পরিস্থিতিতে আপাতত কাউকেই হলে থাকার অনুমতি দেওয়া যাবে না। সবাইকে হল ত্যাগ করতে হবে। তবে শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে দ্রুততম সময়ের মধ্যে হল খুলে দেওয়ার চেষ্টা করব আমরা। কিন্তু এখন সবাইকে যেতে হবে। পরিস্থিতি যে কোন সময় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।'

প্রসঙ্গত, বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. অলিউল্লাহ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞাপ্তিতে হল বন্ধের তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞাপ্তিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উদ্ভূত পরিস্থিতি বিবেচনায় বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। জরুরি সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষা কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়। একই সাথে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে ১৮ জুলাই দুপুর ১২টার মধ্যে সকল শিক্ষার্থীকে আবাসিক হল ত্যাগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow

News Desk Chief Editor, Our Voice Online